প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ১০:৩২
রিজিক বা জীবিকা মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলাম ধর্মে রিজিক শুধুমাত্র পরিশ্রমের ফল নয়, বরং এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত ও বরকতময় এক নিয়ামত। তবে কোরআন ও হাদিসে এমন কিছু আমল বা কাজের কথা বলা হয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে রিজিকে বরকত আসতে পারে এবং তা বৃদ্ধি পেতে পারে।
প্রথমত, তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা রিজিক বৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ উপায়। হজরত উমর (রা.) বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর নির্ভর করে, আল্লাহ তাকে তার রিজিক পৌঁছে দেন।” আল্লাহ তায়ালা সূরা তালাকে বলেন, “যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট।”
দ্বিতীয়ত, সৎ ও ধার্মিক জীবন যাপন রিজিক বৃদ্ধিতে সহায়ক। হাদিসে এসেছে, “যে ব্যক্তি তার জীবিকা হালাল পথে উপার্জন করে, সে কিয়ামতের দিন জান্নাতের সঙ্গী হবে।”
তৃতীয়ত, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা বা ‘সিলাতুর রহম’ রিজিক বাড়ায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি চায় তার রিজিক বাড়ুক ও আয়ু দীর্ঘ হোক, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।”
চতুর্থত, ইস্তেগফার বা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়াও রিজিক বৃদ্ধির মাধ্যম। সূরা নূহে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তোমরা তোমাদের প্রভুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয় তিনি অধিক ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য আকাশ থেকে প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি বৃদ্ধি করবেন।”
পঞ্চমত, সকাল সকাল রিজিকের জন্য কাজ শুরু করাও একটি বরকতের উপায়। হাদিসে এসেছে, “আমার উম্মতের জন্য সকালে বরকত রাখা হয়েছে।” তাই ফজরের নামাজের পর কাজে বের হওয়া রিজিকের জন্য উত্তম।
এছাড়াও বেশি বেশি দান-সদকা করা, গরিবের হক আদায় করা, নামাজ ও কোরআনের তিলাওয়াত বৃদ্ধি করাও জীবিকায় বরকতের কারণ হতে পারে। রিজিক বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই আমলগুলো করা উচিত নিয়তের সঙ্গে এবং নিয়মিতভাবে।
পরিশেষে, রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ। আমাদের উচিত হালাল পথে চেষ্টা করা এবং তাঁর ওপর ভরসা রেখে ধৈর্যধারণ করা। আল্লাহতায়ালা যেন আমাদের সকলের রিজিকে হালাল, বরকতময় ও সহজ করে দেন—এই প্রার্থনা করি।