প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ১০:৫৪
মানুষ জীবনের নানা মোড়ে ভুল করে ফেলে, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে, কেউ না বুঝে। কিন্তু ইসলামে আল্লাহর রহমত এতই বিশাল যে, কোনো বান্দা যদি আন্তরিকভাবে তাওবা করে, তাহলে তাঁর গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। কুরআনে বলা হয়েছে, “তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তাওবা করো, যাতে তোমরা সফল হও।” (সূরা আন-নূর: ৩১)। এটি প্রমাণ করে যে তাওবা শুধুই গোনাহ মাফের উপায় নয়, বরং সফলতার পথে প্রথম ধাপ।
অনেক মানুষ মনে করে যে বড় বড় গোনাহের জন্য আল্লাহ কখনো ক্ষমা করবেন না। কিন্তু হাদীসে এসেছে, “যে ব্যক্তি গোনাহ করার পরও তাওবা করে, সে এমন যেন কোনো গোনাহই করেনি।” (ইবন মাজাহ)। এটি ইসলামের এক অতুলনীয় দয়া, যেখানে বান্দার পাপ যত বড়ই হোক না কেন, তাওবা তাকে নতুনভাবে শুরু করার সুযোগ দেয়।
বিশেষ করে রাতে, যখন চারপাশ নীরব হয়ে যায়, তখন একজন মুসলমান যদি দুই রাকাত সালাত আদায় করে কাঁদতে কাঁদতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সেই মুহূর্তে ফেরেশতারা দোয়া করে তার জন্য। রাসূল (সা.) বলেছেন, “আল্লাহ রাতের শেষ ভাগে দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছে যে আমার কাছে কিছু চাইবে? আমি তাকে দিব। কে আছে যে ক্ষমা চাইবে? আমি তাকে ক্ষমা করব।” (বুখারী, মুসলিম)।
আজকের তরুণ প্রজন্ম অনেক সময় আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, নিজেদের গোনাহের কারণে হতাশায় ডুবে যায়। কিন্তু ইসলাম শিক্ষা দেয়—আশা হারাবার নয়, বরং ফিরে আসার। কারণ আল্লাহ নিজেই বলেছেন, “হে আমার বান্দারা যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছো, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।” (সূরা যুমার: ৫৩)।
তাই আমাদের উচিত, প্রতিদিন কিছু সময় একান্তে বসে নিজের ভুলগুলো নিয়ে ভাবা এবং আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। এই চর্চা শুধু পরকালের প্রস্তুতি নয়, দুনিয়াতেও মানসিক প্রশান্তি ও আধ্যাত্মিক স্থিতি এনে দেয়। তাওবা একটি আশার আলো, যা অন্ধকার জীবনকেও আলোকিত করে তোলে।