প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ১০:৩৯
জুমার দিনকে ইসলাম বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে। এটি সপ্তাহের সর্বোত্তম দিন এবং মুসলমানদের জন্য এক আত্মিক উজ্জীবনের দিন। হাদীসে এসেছে, জুমা হলো মুসলিম উম্মাহর জন্য ‘সপ্তাহের ঈদ’। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সূর্য যে দিনটিতে উদিত হয়েছে, তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন। এই দিনেই আদম (আ.) সৃষ্টি হয়েছিলেন, এই দিনেই তিনি জান্নাতে প্রবেশ করেন এবং এই দিনেই জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে।’ (মুসলিম)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা জুমার নাম উল্লেখ করে একটি সূরা নাজিল করেছেন—‘সূরা আল-জুমুআহ’। এতে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং বেচাকেনা ত্যাগ করো।’ (সুরা জুমুআহ: ৯) এ আয়াতের মাধ্যমে বোঝা যায়, জুমার নামাজ মুমিনদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং কতটা আন্তরিকতার সঙ্গে তা আদায় করা উচিত।
জুমার দিন ফজরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর রহমত বর্ষণের সময়। বিশেষ করে, এই দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যাতে কোনো মুমিন বান্দা যদি আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তা অবশ্যই কবুল হয়। হাদীসে এসেছে, ‘জুমার দিনে একটি সময় রয়েছে, যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়, আল্লাহ তাকে তা দেন।’ (বুখারি, মুসলিম)
জুমার দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো গোসল করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে মসজিদে গমন, সুন্দর পোশাক পরিধান, আতর ব্যবহার, খুৎবা মনোযোগ দিয়ে শোনা এবং আগেভাগেই মসজিদে উপস্থিত হওয়া। হাদীস অনুযায়ী, যত আগে কেউ মসজিদে পৌঁছায়, তার জন্য তত বড় সাওয়াব লেখা হয়—যেমন একটি উট কুরবানি করার মতো সাওয়াব।
এই দিনে বেশি বেশি দরুদ শরীফ পড়া অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো। তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়।’ (আবু দাউদ)
জুমার দিন দান-সদকা, কুরআন তিলাওয়াত ও জিকির-আযকারের জন্যও অত্যন্ত উপযুক্ত সময়। এটি আত্মশুদ্ধির এক মহান সুযোগ। আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়ার এবং গুনাহ মাফ করিয়ে নেওয়ার এক উজ্জ্বল দিন।
তাই আসুন, আমরা জুমার দিনটিকে গুরুত্ব সহকারে পালন করি, ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সচেষ্ট হই এবং আমাদের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার সৎ প্রয়াস চালাই।