প্রকাশ: ১ জুলাই ২০২৫, ১৮:২৭
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কোনো ধরনের নির্বাচন সংস্কার ছাড়া দলটি জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। মঙ্গলবার ঢাকায় দলীয়ভাবে আয়োজিত জুলাই-আগস্টের শহীদ, আহত ও পঙ্গু নেতাকর্মীদের স্মরণে এক দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। সেখানে তিনি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেন এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তাহের বলেন, “আগামী নির্বাচনে জনগণ যাকে ভোট দেবে, তারাই নির্বাচিত হবে। যদি সেই ভোট সুষ্ঠু না হয়, তাহলে জনগণ মেনে নেবে না। সংস্কারহীন নির্বাচন আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।” তিনি আরও বলেন, আজ দেশে যেভাবে নির্বাচন ব্যবস্থা দলীয়করণে জর্জরিত হয়েছে, তাতে প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।
তিনি জুলাই আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, কেউ কেউ এ আন্দোলনের সফলতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেও তাদের চোখে এটি ছিল একটি মহান অর্জন। একটি স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করার এই মুহূর্ত ঐতিহাসিক। যদিও এখনো বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান নয়, তবুও তিনি মনে করেন, জুলাই আন্দোলনের শক্তি এখনো টিকে আছে এবং এটি গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ দেখাবে।
জামায়াত নেতার মতে, এই আন্দোলনের মাধ্যমে একটি ব্যতিক্রমধর্মী ঐক্য তৈরি হয়েছে, যেখানে ভিন্ন মতের রাজনৈতিক দলগুলোও একত্রিত হয়েছে। তিনি বলেন, “জনগণ এখন অনেক বেশি সচেতন। স্বৈরাচারী মানসিকতা এখনো পুরোপুরি বিদায় না নিলেও, জনগণের ভোটের মাধ্যমে সেই শক্তিকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, একটিমাত্র উপায়েই দেশের স্থিতিশীলতা ফেরানো সম্ভব—সেটি হলো একটি গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, বিচারের নিশ্চয়তা, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্র কখনোই টিকবে না।
জামায়াত মনে করে, বিচারহীনতা ও দলীয়করণের অবসান ঘটিয়ে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান জানিয়ে সবাইকে দায়িত্বশীল অবস্থান নিতে হবে।
সর্বশেষ তিনি বলেন, “সংস্কার না এনে যেকোনো নির্বাচন দেশে আরও সংকট তৈরি করবে, যা জাতি মেনে নেবে না। এখন সময় এসেছে সাহসী ও বিবেকবান সিদ্ধান্ত নেয়ার।”