স্বামীকে মৃত দেখিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করার ঘটনা আশুলিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। প্রায় তিন মাস পর বেরিয়ে আসেন নিহত দাবি করা স্বামী আলামিন। মামলার জটিলতা ও লাখ লাখ টাকা বাণিজ্যের অভিযোগে বিষয়টি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছিল গত ৫ আগস্ট। ওইদিন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কুলসুম নামে এক নারী তার স্বামী আলামিনকে সিলেট রেখে একাই আশুলিয়ায় ফিরে আসেন। তবে, পরে আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালে আন্দোলনে নিহত চারটি মরদেহের মধ্যে অজ্ঞাত মরদেহটি নিজের স্বামীর বলে দাবী করেন কুলসুম। তার দাবি ছিল, আন্দোলনকালে তার স্বামী আলামিন বাইপাইলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এরপর কুলসুম ১৩০ জনকে হত্যা মামলায় আসামী করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি নেতাসহ একাধিক নিরীহ ব্যক্তির নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা পরবর্তীতে নানা বিতর্কের জন্ম দেয়। অবশেষে ১৩ নভেম্বর (বুধবার) আলামিন নিজেই প্রকাশ্যে আসেন। তিনি জানান, গত ৫ আগস্ট তিনি সিলেটেই ছিলেন এবং কুলসুমের সাথে তার সম্পর্কের কারণে বিভিন্ন অজুহাতে তার বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। আলামিন আরও জানান, তার স্ত্রী মামলাটি থেকে নির্দোষ মানুষদের নাম বাদ দিতে টাকা নিয়েছেন এবং এর সাথে একটি চক্র জড়িত থাকতে পারে।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানিয়েছেন, "আলামিনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তার স্ত্রীর ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। পুরো মামলাটি তদন্তের পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
কুলসুমের বাবা, আব্দুল খালেক জানিয়েছেন, "আমরা এই ঘটনায় খুবই মর্মাহত। মেয়েটি কীভাবে এমন কাজ করল, আমরা কিছুই জানি না।"
আলামিন মিয়া (২২) লালমনিরহাট জেলার বাসিন্দা। কুলসুমের সঙ্গে তার বিয়ে হয় মানিকগঞ্জ জেলার শিংজুরি গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে কুলসুমকে নিয়ে।
এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয়রা কুলসুমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।