মহামারী করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। তবে খেটে খাওয়া মানুষের কথা চিন্তা করে বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করে অভ্যন্তরীর পরিবহন চলাচলের অনুমতি দিলেও দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে সরকার। তাছাড়া করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে দেশবাসীকে যে যার অবস্থানে থেকে ঈদ উৎসব পালনের আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কিন্তু কে শোনে কার কথা।
আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহর থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। বিভিন্ন মাধ্যমসহ পায়ে হেটেও অনেকে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে দিয়েছে। ফলে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ঈদপূর্ব মহাসড়কে যানজট, ফেরীঘাটে উপচে পড়া ভীর লক্ষ্য করা গেছে।
বিভিন্ন মিডিয়ার কল্যাণে দেখা গেছে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নারী-পুরুষ-শিশু-বয়োবৃদ্ধরা নদী পার হওয়ার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে নৌযান বন্ধ থাকায় ফেরীঘাটে সাধারণ মানুষের ভীর বেড়েছে। যেন তীল ধারণের ঠাঁই নেই। এত লোকের ভীরে প্রশাসনও অসহায়। ফলে কোন ধরণের সামাজিক দূরত্বতো নেই-ই, এমনকি মাস্ক ব্যবহারও করছেন না অনেকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেরীতে যে পরিমান লোক সমাগম হচ্ছে এবং গাঁ ঘেষাঘেষি করে বাড়ি যাওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হচ্ছে তাতে করোনা সংক্রমন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। আর গত শনিবার পাশর্^বর্তী দেশ ভারত থেকে আসা ছয় জনের শরীরে ভারতের করোনার নতুন ভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় এ নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকরা।
দেশের সব ধরণের অভ্যন্তরীন যানবাহন, শপিংমল, গার্মেন্ট খোলা রেখে শুধুমাত্র দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ রাখলেও মানুষ কিন্তু থেমে নেই। এক জেলা হয়ে অন্য জেলায় ঠিকই প্রবেশ করছে তারা। এর চেয়ে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে নিশ্চিত করা যেত। তাহলে অন্তত ফেরীঘাটে এমন পরিস্থিতি তৈরী হতো না।
তাছাড়া ঢাকা শহরে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার ক্ষেত্রে চেকপোস্টে কড়া নজরদারী পালন করা হলেও এমন অবস্থা হতো না বলে বোদ্ধা মহল মনে করেন। রাজধানী ছেড়ে যাওয়া অনেকের সাথেই আলাপকালে তারা জানিয়েছে আগে যেখানে যার যার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে ১ হাজার টাকা খরচ হতো এখন সেখানে খরচ হচ্ছে তিনগুনেরও বেশি। আর বাস্তবে যদি তেমনটাই হয় তাহলে ঢাকা না ছেড়ে সেখানেই কিন্তু ওই টাকা দিয়ে তিনি চলতে পারতেন।
তবে নানা অজুহাত দেখিয়ে তারা ছুটছে তো ছুটছেই। আমাদের মধ্যে নূন্যতম বিবেকবোধ নেই। এদিকে ব্যবসায়ীদের দাবীর প্রেক্ষিতে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে দোকানপাট ও শপিংমল খোলার অনুমতি দিয়েছে সরককার। সম্ভবত এ অপেক্ষাতেই ছিল ক্রেতারা।
মার্কেট খোলার পরপরই তারা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন মার্কেটগুলোতে। আর সেখানে স্বাস্থ্যবিধি চরম উপেক্ষিত হচ্ছে।
দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, জনগণ সচেতন না হলে ভারতের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি হওয়ার আশংকা রয়েছে আমাদের।
শুধুমাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রীই নন, দায়িত্বশীল সকল সূত্র জনগণের সচেতনতার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
সরকারের প্রতি আহবান থাকবে, “কঠোর হোন, দেশ ও জাতিকে বাঁচান”।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।