রাত তখন আটটা, ঢাকা মেডিকেলের সামনে স্বামী স্ত্রী ঠায় দাঁড়িয়ে, অপেক্ষা আর অপেক্ষা মাকে বহনকারী এম্বুলেন্স কখন আসবে। ওয়ার্ড ইনচার্জ মাহিন এসে বলল স্যার ভিতরে এসে বসেন। ৩০/৩৫ বছর বয়সি মাহিন, উচ্চতায় ৫ ফিট ৮ ইঞ্চি হবে, বাড়ী নোয়াখালী হলেও কথায় আঞ্চলিকতার টান নেই। কথা বলার সময় বার বার হাত দিয়ে টেনে মাস্ক নামিয়ে কথা বলা তার অভ্যাস।
কৌতুহল বসত কারন জিজ্ঞাসা করলে মাহিন বলে ‘স্যার ২ বছর করোনা ওয়ার্ডে ডিউটি করতাছি, করোনা-ফরোনা আমারে ধরে না, ধরবে না। ওইগুলা যারা ডড়ায় তাগোরে ধরে।’ মাহিনের কথা ঠিক যেন কানে যাচ্ছে না রোহানের, টেনশনে কোন কিছুই ভাল লাগছে না তার। হাসপাতালের সামনে এদিক ওদিক পায়চারি করছে। চোখের সামনে শুধু শ্বাশুড়ির মায়াবি মুখটা ভেসে উঠছে। স্ত্রীকে কোন ভাবে বুঝিয়ে টুঝিয়ে গাড়ীতে বসিয়ে রেখেছে । স্ত্রী রেনু কিছু সময় পর পর শুধু ঢুকরে ঢুকরে কাদছে। কোভিড আফটার শক এ স্ট্রোক করেছে রোহানের শ্বাশুরি।
দুই ঘন্টা যাবত ঠায় দাঁড়িয়ে হাসপাতালের সামনে। একের পর এক এম্বুলেন্স এসে থামছে, কেউ অচেতন, কেউ অর্ধ চেতন, সবার মুখেই অক্সিজেন মাস্ক লাগানো। এক মুহুর্তের জন্যেও খোলার জো নেই। কেউ এসেছে নোয়াখালী, কেউ কক্সবাজার আবার কেউ রাজশাহী থেকে। রোগীর আত্মীয় স্বজনরা দ্বিগভ্রান্তের মত এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছে ওষুধ, পথ্য, জিনিসপত্রের জন্য। (চলমান)
----- লেখকঃ আব্দুল হালিম, সহকারী পুলিশ কমিশনার, বাংলাদেশ পুলিশ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।