প্রকাশ: ১২ মে ২০২৫, ১০:৩৩
ইসলামে পবিত্রতা এক অত্যাবশ্যক বিষয়, যা ইবাদতের পূর্বশর্ত হিসেবেই বিবেচিত। দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজে যেমন নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, কিংবা মসজিদে প্রবেশ—সকল ক্ষেত্রেই শারীরিক ও আত্মিক পবিত্রতার গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলাম ধর্মে ওযু, গোসল ও তায়াম্মুমের বিধান মূলত এই পবিত্রতারই অবিচ্ছেদ্য অংশ। আর এই পবিত্রতা অর্জনের প্রধান মাধ্যমই হলো পানি। কোরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আর আমি প্রতিটি জীবন্ত জিনিস সৃষ্টি করেছি পানি দ্বারা” (সূরা আম্বিয়া, আয়াত ৩০)। এটি প্রমাণ করে যে, পানির ব্যবহার শুধুমাত্র দৈহিক নয়, বরং আত্মিক বিশুদ্ধতার জন্যও অপরিহার্য।
নবী করিম (সা.) নিজে সর্বদা পবিত্রতা রক্ষা করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করতেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, ‘পবিত্রতা হচ্ছে ঈমানের অর্ধেক।’ এই হাদিসে বোঝানো হয়েছে যে, একজন মুসলমানের জীবনে পবিত্রতা কেবল বাহ্যিক পরিচ্ছন্নতা নয়, বরং এটি তার ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলাম চায় প্রতিটি মুসলমান যেন সব সময় পরিচ্ছন্ন থাকে, বিশেষ করে নামাজের সময় যেন তার দেহ, পোশাক ও জায়গা সবই পবিত্র থাকে।
তবে শুধু পানি ব্যবহার করলেই যথেষ্ট নয়, বরং সঠিক নিয়মে ওযু করা, প্রত্যেক অঙ্গ ভালোভাবে ধোয়া, এবং নির্দিষ্ট দোয়া পাঠ করা গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমভাবে ওযু করে এবং দুই রাকাত নামাজ পড়ে, আল্লাহ তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেন।’ এতে বোঝা যায়, পবিত্রতার সঙ্গে ইবাদত করলে তার ফজিলত অনেকগুণ বেড়ে যায়।
বর্তমান সময়েও মুসলমানদের উচিত, ঘন ঘন ওযু করে থাকা, বিশেষ করে নামাজের সময় ও খাবার খাওয়ার আগে। এটি শুধু ইবাদতের প্রস্তুতি নয়, স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও অত্যন্ত উপকারী। অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, নিয়মিত হাত ও মুখ ধোয়ার মাধ্যমে সংক্রামক ব্যাধি কমে এবং মন মানসিকতা সতেজ থাকে।
পবিত্রতা কেবল শরীরিক নয়, বরং নৈতিক ও আত্মিক পবিত্রতাও ইসলাম সমান গুরুত্ব দিয়েছে। যেমন, কারো সম্পর্কে কটূ কথা বলা, গীবত করা বা অন্যায় আচরণ থেকেও আত্মাকে পবিত্র রাখতে হয়। একজন প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি, যার মুখ ও হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।
পরিশেষে বলা যায়, ইসলাম পবিত্রতাকে শুধু ইবাদতের অঙ্গ নয়, বরং সম্পূর্ণ জীবনব্যবস্থার অংশ হিসেবে দেখেছে। একমাত্র ইসলামই এমন ধর্ম, যেখানে প্রতিটি কাজ শুরুর আগে আত্মিক ও বাহ্যিক পরিচ্ছন্নতার উপর এত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই আসুন, আমরা পবিত্রতা রক্ষা করে নিজেদের ইবাদত ও দৈনন্দিন জীবনকে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে পরিচালিত করি।
চাইলে আমি এই সংবাদের জন্য একটি ইসলামিক থিমের ছবি তৈরি করে দিতে পারি। কি আপনি চান?