প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৫, ১০:৫৯
মানুষের মৃত্যুর পর শুরু হয় আখিরাতের দীর্ঘ সফর। সেই সফরের প্রথম ধাপই হলো কবর। কোরআন ও হাদীসের আলোকে জানা যায়, কবর হচ্ছে জান্নাতের বাগান অথবা জাহান্নামের গর্ত। এই জীবনে আমাদের কর্মের ভিত্তিতেই নির্ধারিত হবে কবরের অবস্থা। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘কবর হলো আখিরাতের প্রথম ধাপ। কেউ যদি তা থেকে রক্ষা পায়, তাহলে তার পরবর্তী অংশ সহজ হয়ে যায়।’ (তিরমিজি)
কবরের প্রশ্নাবলী নিয়ে বহু সহীহ হাদীসে এসেছে, মুনকার ও নাকির নামক দুই ফেরেশতা মুমিন ও কাফের উভয়কেই প্রশ্ন করবে—‘তোমার প্রভু কে? তোমার দ্বীন কী? এবং তোমার নবী কে?’ যারা সঠিকভাবে উত্তর দিতে পারবে না, তাদের জন্য কবর হবে চরম কষ্টের স্থান। যারা ইমান নিয়ে মৃত্যুবরণ করে এবং সৎকাজ করে, আল্লাহ তাদের কবরকে প্রশান্তিময় করে দেন। হাদীসে আছে, একজন মুমিনের কবর ৭০ হাত পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেওয়া হয়।
আজকের সমাজে আমরা কবর নিয়ে ভাবি না। অথচ প্রতিটি জানাজার সময় কবর চোখের সামনে পড়ে, কিন্তু হৃদয় তাতে না কাঁপলে সেটা বড় বিপদ। রাসূল (সা.) বলেছিলেন, ‘প্রচুর পরিমাণে মৃত্যুকে স্মরণ করো, যা সব আনন্দ নষ্ট করে দেয়।’ (তিরমিজি) কবরের জীবনকে স্মরণ করার মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার মোহ থেকে বের হতে পারে এবং নিজেকে আত্মশুদ্ধির পথে নিতে পারে।
আমাদের উচিত কবরের জবাবের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া। নামাজ, রোযা, জাকাত, হালাল-হারাম থেকে বাঁচা, মানুষকে কষ্ট না দেওয়া—এসবই আমাদের কবরের অবস্থাকে নির্ধারণ করবে। যাদের কবর শান্তিময়, তাদের জন্য কেয়ামতের দিন সহজ হয়ে যায়। আর যাদের কবর কষ্টের, তারা আরও কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হবে।
প্রতিটি মানুষকে একদিন কবরেই নামতে হবে। সেখানে কোনো আত্মীয়-স্বজন, ক্ষমতা কিংবা সম্পদ কাজে আসবে না। কেবল ইমান ও আমলই সঙ্গে যাবে। তাই এখনই সময়, নিজের কবরের অবস্থা নিয়ে ভাবার। যেন আমাদের কবর আলোকিত হয়, প্রশান্তিময় হয়, জান্নাতের এক বাগানে পরিণত হয়।
আল্লাহ তাআলা যেন আমাদের সবাইকে কবরের কঠিন জবাবদিহি থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতের পথে পরিচালিত করেন। আমিন।