প্রকাশ: ১০ মে ২০২৫, ১২:০
ইসলামের ইতিহাসে ধৈর্যের সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। তার জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে তিনি যেভাবে ধৈর্য ধারণ করেছেন, তা আজও বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের জন্য অনুকরণীয় হয়ে রয়েছে। ধর্ম প্রচারে বাধা, নির্যাতন, অপমান এবং যুদ্ধ—সব ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন ধৈর্যশীল, যা আমাদের শিখিয়ে দেয় সংকটে কীভাবে আত্মনিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে হয়।
মক্কা নগরীতে ইসলামের দাওয়াত শুরু করার পর কুরাইশদের কাছ থেকে তিনি যেভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন, তা আজও ইতিহাসে বেদনাদায়ক অধ্যায় হিসেবে রয়ে গেছে। তবুও তিনি কখনো প্রতিশোধের পথে হাঁটেননি। বরং সবসময় আল্লাহর প্রতি আস্থা রেখে সহনশীলতার সঙ্গে সামনের পথে এগিয়ে গেছেন।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তায়েফ সফরের ঘটনা। সেখানে ইসলামের দাওয়াত দিতে গিয়ে শিশু-কিশোরদের দিয়ে তাকে পাথর ছুঁড়িয়ে শহর ছাড়তে বাধ্য করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায়ও তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করেছিলেন তাদের হিদায়াতের জন্য। এমন দৃষ্টান্ত বিশ্ব ইতিহাসে বিরল।
হিজরতের সময় যখন তিনি আবু বকর (রা.)-এর সঙ্গে সওর গুহায় আশ্রয় নেন, তখন চারদিকে শত্রুর ঘেরাও। তবু ভরসা হারাননি। পরবর্তীতে মদিনায় ইসলামী সমাজ গঠনের চ্যালেঞ্জগুলোও তিনি অতিক্রম করেন ধৈর্য, কৌশল এবং নেতৃত্বগুণ দিয়ে।
বদর যুদ্ধের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়েও রাসুল (সা.) ধৈর্য হারাননি। সীমিত সামর্থ্য নিয়েও তিনি সাহস ও আল্লাহর ওপর আস্থার মাধ্যমে নেতৃত্ব দেন, যা ইসলামের প্রথম বিজয়ের পথ খুলে দেয়। এই ধৈর্যই ছিল তার এক অনন্য অস্ত্র।
হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় চুক্তির শর্তগুলো মুসলমানদের জন্য কঠিন মনে হলেও রাসুল (সা.) তা মেনে নেন ভবিষ্যতের বৃহত্তর কল্যাণ চিন্তা করে। পরবর্তীতে এটি ইসলাম বিস্তারে সহায়ক হয়। এতে প্রমাণ হয়, ধৈর্য ও দূরদর্শিতা কিভাবে বড় জয় এনে দিতে পারে।
বিশ্বের অস্থির পরিবেশে আজও রাসুল (সা.)-এর জীবনের এই দৃষ্টান্ত আমাদের জন্য দিকনির্দেশনা হয়ে দাঁড়ায়। পারিবারিক, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয় সংকটে ধৈর্যই হতে পারে শান্তি ও সমাধানের মূল চাবিকাঠি।