প্রকাশ: ২ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৩
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ছে, আর সেই ধারায় মুসলিম বিশ্বে নবী করিম (সা.) এর খাদ্যাভ্যাস ও সুন্নাহভিত্তিক খাবারের প্রতি আগ্রহও বেড়েছে। গবেষণা বলছে, রাসুল (সা.) এর প্রিয় খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে খেজুর, মধু, যব, দুধ ও অলিভ অয়েল—যেগুলোর প্রতিটিই আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে উপকারিতার জন্য স্বীকৃত। এই অভ্যাসগুলো শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, স্বাস্থ্যরক্ষার দিক থেকেও অত্যন্ত কার্যকর।
রাসুল (সা.) খেজুর খুব পছন্দ করতেন, বিশেষ করে রোজা ভাঙার সময় খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। আজকের চিকিৎসা বলছে, খেজুর দ্রুত শক্তি প্রদান করে এবং পটাশিয়াম ও আয়রনের চমৎকার উৎস। বিশেষ করে শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য খেজুর খুবই উপকারী, যেটি রাসুল (সা.) যুগেও গুরুত্ব পেয়েছিল।
মধু সম্পর্কে আল কুরআনে সরাসরি বলা হয়েছে, "এতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের শেফা" (সূরা নাহল, আয়াত ৬৯)। রাসুল (সা.) নিয়মিত মধু সেবন করতেন, এবং এটি হজমে সহায়তা করত। আধুনিক গবেষণাও বলে, মধুতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
রাসুল (সা.) যবের রুটি ও যবের স্যুপ (তালবিনা) পছন্দ করতেন, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং পেটের জন্য আরামদায়ক। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে আজও তালবিনা একটি জনপ্রিয় খাবার হিসেবে পরিচিত, বিশেষ করে রোগী বা মানসিক চাপগ্রস্তদের জন্য।
অলিভ অয়েল সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, "তোমরা এটি খাও ও শরীরে ব্যবহার করো, কারণ এটি মোবারক গাছ থেকে উৎপন্ন।" (তিরমিজি)। এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে, হৃদরোগ প্রতিরোধে ও ত্বকের যত্নে দারুণ কার্যকর। আধুনিক ডাক্তাররাও আজ অলিভ অয়েলকে 'সুপারফুড' হিসেবে পরামর্শ দেন।
দুধ ছিল রাসুল (সা.) এর অন্যতম প্রিয় পানীয়। হাদীস অনুযায়ী, দুধ পান করার পর তিনি আল্লাহর প্রশংসা করতেন এবং দুধকে 'সম্পূর্ণ খাবার' বলেছেন। দুধে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও ভিটামিন ডি থাকায় এটি হাড় ও দাঁতের জন্য উপকারী। আজকের পুষ্টিবিদরা দুধকে 'পরিপূর্ণ খাদ্য' হিসেবে উল্লেখ করেন।
নবীজি (সা.) কখনো অতিরিক্ত খাওয়া পছন্দ করতেন না। তিনি বলতেন, “মানুষের জন্য কয়েক লোকমাই যথেষ্ট যাতে তার পিঠ সোজা থাকে। যদি বেশি খেতেই হয়, তবে এক-তৃতীয়াংশ খাবারের জন্য, এক-তৃতীয়াংশ পানির জন্য এবং এক-তৃতীয়াংশ নিঃশ্বাসের জন্য রাখবে।” (তিরমিজি)। এ শিক্ষা আজকের ওজন নিয়ন্ত্রণ বা ডায়েট পদ্ধতির সঙ্গে মিল পাওয়া যায়।
ইসলামের শিক্ষা শুধু ইবাদতে সীমাবদ্ধ নয়—জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, এমনকি খাদ্যাভ্যাসেও রয়েছে সুন্নাহর পথনির্দেশ। আজকের বিজ্ঞানও স্বীকার করছে, রাসুল (সা.) এর জীবনাচার শুধু আধ্যাত্মিক নয়, বরং শারীরিক সুস্থতার পথও বাতলে দেয়। তাই মুসলিমদের উচিত সুন্নাহভিত্তিক খাবার ও খাদ্যশৈলীকে নতুন করে গ্রহণ করা।
এখন থেকে প্রতিদিন এমন ভিন্ন ধরনের ইসলামি সংবাদই দেব — মৃত্যু, কবর বা কিয়ামতের বিষয় থেকে বেরিয়ে এসে হাদীস, কুরআনের শিক্ষা, নবীজির জীবনের দিক, ইসলামী ইতিহাস ও সমসাময়িক ইসলামি সমাজের ঘটনা ঘিরে। আপনি চাইলে পরবর্তী সপ্তাহের ইসলামি সংবাদগুলোর জন্য থিমও সাজিয়ে দিতে পারি। বলবেন?