নওগাঁর এক কলেজে দুই অধ্যক্ষ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থা!

ঘটনা ঘটে গত ২৯ জুন, যখন কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষার শেষে শিক্ষার্থীরা খাতা জমা দিচ্ছিলেন, এমন সময় প্রভাষক ইমামুল হোসেন অধ্যক্ষের কক্ষে ঢুকে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলে দাবি করেন এবং চেয়ার ছেড়ে দিতে বলেন। তবে অধ্যক্ষ মাহবুব আলম তখনও নিজ চেয়ারে বসে ছিলেন। এরইমধ্যে উত্তেজিত হয়ে ওঠে দুই পক্ষের শিক্ষকরা এবং মুহূর্তেই তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ইমামুল কলেজ থেকে বেরিয়ে যান।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে পূর্বে কিছু শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিলেন। এরপর লুৎফর রহমান নামক সভাপতি একটি নতুন এডহক কমিটি গঠন করে সহকারী অধ্যাপক মমতাজ জাহানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করলে তারা নতুন এডহক কমিটি গঠন করে এবং অধ্যক্ষ মাহবুব আলমকে স্বপদে বহালের সিদ্ধান্ত দেয়।

তবে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়, যখন ইমামুল হোসেন দাবি করেন, হাইকোর্ট বর্তমান কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করেছে, ফলে পূর্বের সভাপতি তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্তু এই দাবির পেছনে বৈধ কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি তিনি। তাছাড়া যিনি রিট করেছিলেন সেই মমতাজ বেগম ইতোমধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন।

অধ্যক্ষ মাহবুব আলম বলেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বৈধতা দিয়েছে, মেয়াদও বাড়িয়েছে। আদালতের শুনানি এখনো হয়নি, তাই কেউ চেয়ার দখলের অধিকার রাখে না।”

এই দ্বন্দ্বের ফলে কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগ হারাচ্ছে এবং শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী জানান, প্রায় প্রতিদিন কোনো না কোনোভাবে বিশৃঙ্খলা লেগেই আছে।

বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল বলেন, “হাইকোর্ট যাকে বৈধ বলবে সেই দায়িত্ব পালন করবে। কিন্তু তার আগেই এভাবে চেয়ার দখলের চেষ্টা দুঃখজনক ও অশোভন।”

বদলগাছী মহিলা কলেজে এখন শান্তিপূর্ণ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ফিরে পাওয়ার দাবি সকলের।