প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ২০:৪৭
গাজা উপত্যকায় একের পর এক বোমা হামলার পর এবার ‘ব্যাপক’ স্থল অভিযানে নেমেছে দখলদার ইসরায়েল। রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে একযোগে স্থল হামলা চালানো হচ্ছে। তারা এটিকে ‘অপারেশন গিডিয়ন চ্যারট’-এর অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছে। ইসরায়েলের দক্ষিণ কমান্ড ও রিজার্ভ বাহিনী এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে।
এই হামলার উদ্দেশ্য হামাসের শক্তি ভেঙে দেওয়া বলে দাবি করেছে আইডিএফ। তারা জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে হামাসের ৬৭০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে, যার মধ্যে ছিল গোপন সুড়ঙ্গপথ, অস্ত্রাগার এবং ট্যাংকবিধ্বংসী স্থাপনা। হামাসের বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত এবং অনেক অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের এই হামলার নেপথ্যে ‘অবৈধ বসতি স্থাপনকারী’ ইসরায়েলিদের রক্ষার কারণ দেখানো হলেও বাস্তবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেসামরিক মানুষ। শুধুমাত্র রবিবারই ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় ১৩৫ জন নিহত হয়েছে। গত এক সপ্তাহে নিহতের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে, যার অধিকাংশই নারী ও শিশু।
হামলার ফলে গাজার উত্তরাঞ্চলের সব হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। আহতরা চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অব্যাহত বিমান হামলায় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও মানবসম্পদের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে।
এই বর্বরতা বন্ধে কাতারের রাজধানী দোহায় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে হামাসের আলোচনা চললেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। হামাস জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ইসরায়েলের সব সেনা গাজা ছাড়ার, অবরোধ তুলে নেওয়ার এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য তারা কাজ করছে, তবে তার শর্ত হলো—হামাসের যোদ্ধাদের গাজা ছেড়ে চলে যেতে হবে এবং গাজাকে পুরোপুরি নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা এবং দখলদারদের একতরফা আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের জনজীবন বিপর্যস্ত। যুদ্ধবিরতির নামে নতুন শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হলে মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর হবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।