প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৫, ২১:২৮
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন তুলেছেন, শেখ হাসিনা যেহেতু বাংলাদেশি ও মুসলমান, তাহলে ভারত তাকে কেন পুশ-ইন করছে না। সোমবার (২৮ জুলাই) নয়াপল্টনে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক মিলাদ মাহফিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এই প্রশ্ন করেন।
রিজভী বলেন, পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় বহু বাঙালি মুসলমান বাস করে। তাদের অনেককে জোর করে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হচ্ছে। অথচ শেখ হাসিনাও তো বাঙালি, মুসলমান ও বাংলাদেশের নাগরিক—তাহলে তাকে কেন ভারত একইভাবে পুশ-ইন করছে না। তিনি এর মাধ্যমে ভারত সরকারের নির্বাচনী পক্ষপাতদুষ্ট নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ভারত বাংলাদেশে এমন একটি সরকার দেখতে চায়, যেটি তাদের অনুগত থাকবে। জনগণ সেই সরকার পছন্দ করুক না করুক, ভারতের এতে কিছু যায় আসে না। তিনি বলেন, ভারতের মতো সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলো অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে চায় বলেই তারা তাদের পছন্দের সরকার চাপিয়ে দিতে চায়।
রিজভী বলেন, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে মুসলিম নাগরিকদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে নাগরিকত্ব সংকট তৈরি করা হয়েছে। হাজার হাজার মুসলমান পরিবারকে নাগরিকত্ব তালিকা থেকে বাদ দিয়ে সীমান্তে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে ভারতীয় মুসলমানদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ভারত যেসব বাংলাদেশি দুর্বৃত্ত, অর্থ পাচারকারী, ব্যাংক লুটেরাদের আশ্রয় দিয়েছে, তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে সরকার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। এদিকে নিরীহ মুসলমানদের জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়ে আমাদের দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।
রিজভী সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে বলেন, একটি দেশপ্রেমিক এবং জাতীয়তাবাদী সরকার হলে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতো এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতো। কিন্তু বর্তমান সরকারের অবস্থান নীরব ও আপোষমূলক।
বিএনপির এই নেতা মনে করেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় এমন সরকারই ভারতের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। কারণ তারা মনে করে, অনির্বাচিত সরকার সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
রিজভীর এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় তুলেছে এবং সীমান্তে পুশ-ইন ইস্যু নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।