প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৫, ১৯:৫৬
রাজবাড়ী জেলা গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের এক পরিবারের মাঝে গত দেড় মাস ধরে নববধু হিসেবে যিনি ছিলেন, তিনি আসলে একজন পুরুষ ছিলেন। মাহমুদুল হাসান শান্ত নামের ওই ব্যক্তির নতুন বিয়ের নববধু সামিয়া নামে পরিচিত ছিলেন কিন্তু আসল নাম মো. শাহিনুর রহমান। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় এ তথ্য প্রকাশ পেয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। সামিয়া চট্টগ্রামের আমতলা ঈদগাহ বৌ বাজার এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে।
পরিবার ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে জানা যায়, শান্ত ফেসবুকে সামিয়ার সঙ্গে পরিচিত হন। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর গত ৭ জুন সামিয়া শান্তের বাড়িতে চলে আসেন। পরিবারের সম্মতিতে স্থানীয় ইমাম হুজুরের মাধ্যমে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। নববধু হিসেবে শান্তের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন সামিয়া। প্রথমদিকে পরিবারের কেউ সন্দেহ করেননি যে নববধু আসলে পুরুষ।
কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পরে নববধুর আচরণে কিছু অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা হয়। শান্ত ও তার পরিবারের সদস্যরা সন্দেহ করতে থাকেন এবং তদন্তে নিশ্চিত হন যে, সামিয়া আসলে পুরুষ। এ ঘটনা প্রকাশ পেলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
মাহমুদুল হাসান শান্ত জানান, বিয়ের পর থেকেই নববধুর আচরণ রহস্যজনক ছিল। অনেক সময় তিনি অসুস্থতার কথা বলতেন এবং ডাক্তার কাছে যেতে নিষেধ করেছিলেন। শান্তের মা মোছা. সোহাগী বেগম বলেন, নববধু আমাদের পরিবারের একজন ছেলে মানুষ ছিল, আমরা কখনো ভাবতে পারিনি। তিনি পরিবারকে মুগ্ধ করতে অভিনয় করতেন, যা আমরা বুঝতে পারিনি।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর শনিবার সকালে নববধুকে তার নিজ বাড়িতে পাঠানো হয়। সামিয়া বা মো. শাহিনুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, শান্তের সঙ্গে তার আচরণ ভুল হয়েছে এবং সে অন্যায় করেছে। তিনি জানান, তিনি হরমোনজনিত শারীরিক সমস্যা নিয়ে ভুগছেন, যার জন্য নিজের আপনেকে মেয়ে ভাবতে ভালো লাগে।
এই ঘটনা স্থানীয় সমাজ ও পরিবারে ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নববধুর প্রকৃত পরিচয় গোপন রেখে বিয়ের ঘটনা সামাজিক ও পারিবারিক বিশ্বাসঘাতকতার উদাহরণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিয়ের আগে সঠিক যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা উচিত।
পরিবার ও এলাকাবাসী আশা করছে, এই ঘটনাটি সমাজে সচেতনতা বাড়াবে এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা ও সম্মান রক্ষায় সাহায্য করবে। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে সামাজিক সম্পর্কের গভীরতা ও বিশ্বস্ততার গুরুত্ব অপরিসীম।