প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৬
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে প্রকাশ্যেই হত্যার হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। তিনি রোববার দক্ষিণ ইসরায়েলের রামন বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনে গিয়ে এ হুঁশিয়ারি দেন। তার এই বক্তব্যে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা আরও একধাপ বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমি এখান থেকেই স্বৈরাচারী খামেনিকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই: যদি আপনি ইসরায়েলকে হুমকি দেওয়া অব্যাহত রাখেন, তাহলে আমাদের দীর্ঘ হাত তেহরানে পৌঁছাবে, এবং এবার আপনি নিজেও লক্ষ্যবস্তু হবেন।” ইসরায়েলের প্রভাবশালী দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথ তার এই বক্তব্য উদ্ধৃত করে।
এই বক্তব্যের মাধ্যমে ইসরায়েল যেন ইরানকে সরাসরি বার্তা দিচ্ছে যে, শুধু পরোক্ষ যুদ্ধ নয়, এবার ব্যক্তিগতভাবে ইরানের শীর্ষ নেতৃত্বও হামলার টার্গেটে পরিণত হতে পারে। তবে ইসরায়েলের এই হুমকির জবাবে তাৎক্ষণিকভাবে ইরানের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এই হুমকি এমন সময়ে এলো, যখন কিছুদিন আগেই ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছিল। গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। তেহরান পাল্টা জবাবে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা করে এবং সংঘাত ১২ দিন ধরে চলে।
ওই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। এই ঘটনাগুলোর মধ্য দিয়ে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা শুধু আঞ্চলিক নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
পরবর্তীতে এই সংঘাত গত ২৪ জুন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে কিছুটা স্তিমিত হয়। কিন্তু ইসরায়েলি মন্ত্রীর সাম্প্রতিক এই হুমকির পর বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে।
ইসরায়েলের এই অবস্থান ইঙ্গিত দেয়, দেশটি আবারও ইরানে সামরিক অভিযানে যেতে প্রস্তুত এবং এবার লক্ষ্য শুধুমাত্র স্থাপনা নয়, বরং শীর্ষ নেতৃত্বকেও অন্তর্ভুক্ত করছে। এ ধরনের প্রকাশ্য হুমকি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বিরল এবং সংঘাতের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে ইরান কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, সেটাই এখন আন্তর্জাতিক দৃষ্টির কেন্দ্রে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে—কোনো তাৎক্ষণিক সংঘর্ষ মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ বয়ে আনতে পারে।