প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ২১:৪২
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের মডেল হাইস্কুলসংলগ্ন এলাকায় সম্প্রতি মরা পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজিং মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের ঘটনা নজরে আসার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিযান চালান উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নাহিদুর রহমান। অভিযানে ড্রেজিং কাজে ব্যবহৃত বিপুল সংখ্যক পাইপ এবং একটি বড় শ্যালো মেশিন ধ্বংস করে দেন তিনি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোনো ধরনের বৈধ অনুমতি ছাড়াই এভাবে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল, যা পরিবেশ ও জনস্বার্থের পরিপন্থী।
অভিযান চলাকালে ইউএনও জানান, প্রায় ২৫-৩০টি পাইপ এবং একটি শক্তিশালী শ্যালো মেশিন ভেঙে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের সরাসরি সতর্ক করা হয়েছে যেন ভবিষ্যতে প্রশাসনের অনুমতি ব্যতীত কোথাও মাটি বা বালু উত্তোলন না করেন। তিনি আরও বলেন, মরা পদ্মার মতো জলাশয় থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন শুধু পরিবেশ ধ্বংস করে না, বরং কৃষি জমি ও আশেপাশের মানুষের বসতভিটাকেও হুমকির মুখে ফেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে আতঙ্কে ছিলেন। প্রতিদিনের কোলাহল এবং নদীর পাড় ক্ষয়ের কারণে অনেকে ঘরবাড়ি হারানোর আশঙ্কায় ভুগছিলেন। অবশেষে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে অনেকটা স্বস্তি ফিরে এসেছে সাধারণ মানুষের মাঝে।
এদিকে ড্রেজিং চক্রটি দীর্ঘদিন ধরেই মরা পদ্মার নির্জন এলাকায় রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করছিল বলে অভিযোগ। তারা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন যন্ত্রপাতি দিয়ে নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করে তা ট্রাকযোগে বিভিন্ন নির্মাণস্থলে বিক্রি করত।
অভিযান চলাকালে কোনো আটক বা গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেনি, তবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। অবৈধ বালু ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রশাসনের এ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সচেতন মহল।
জনস্বার্থে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন ইউএনও মোঃ নাহিদুর রহমান। তিনি এলাকাবাসীকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান, যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন অবৈধভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ লুটে নিতে না পারে।