আল্লাহ কে? এই প্রশ্ন মানবজাতির চিরন্তন অনুসন্ধান। হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী এই বিষয়ে পবিত্র কুরআনের আলোকে তুলে ধরেছেন মহান আল্লাহর পরিচয়, কর্তৃত্ব ও মানুষের প্রতি তার নির্দেশনার প্রকৃত রূপ। কুরআনের সূরা ইউনুসের তৃতীয় আয়াতে আল্লাহ নিজেই জানিয়েছেন, তিনি আসমান-যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং বিশ্বজগতের শাসনকর্তা হিসেবে সমাসীন আছেন।
তিনি বলেন, সৃষ্টির পর আল্লাহ কোনোভাবেই নিস্ক্রিয় নন বরং তিনি নিয়ন্ত্রণ করছেন প্রতিটি ঘটনার গতিপথ। মানবজাতি অনেক সময় ভুলভাবে মনে করে, এই বিশাল জগত যেন এমনি করেই চলছে, কেউ যেন নিয়ন্ত্রণ করছে না। অথচ কুরআন স্পষ্টভাবে বলছে, প্রতিটি ঘটনাই আল্লাহর হুকুম ও অনুমতিক্রমে সংঘটিত হয়।
শুধু সৃষ্টি করাই নয়, আল্লাহ এই বিশ্বজগতের প্রতিপালক, শাসক ও পরিচালক। তিনি যেভাবে ইচ্ছা তেমনভাবেই এই জগত চালান এবং এই শাসন ব্যবস্থার একজনই মালিক। আল্লাহর এই রুবুবিয়াত বা সার্বভৌমত্ব স্বীকার করা মানেই তারই ইবাদত করা আবশ্যক। ইবাদতের অন্তর্নিহিত অর্থ হলো দাসত্ব, আনুগত্য এবং প্রভুর প্রতি শ্রদ্ধা।
এই ইবাদত কেবল নামাজ, রোজা, হজের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী চলাই তার প্রকৃত রূপ। একজন মুমিনের জীবনে আল্লাহর নির্দেশই চূড়ান্ত এবং তার বাইরে অন্য কোনো কর্তৃত্ব স্বীকৃত নয়। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী মানুষ নিজেকে আল্লাহর দাস হিসেবে গড়ে তোলে।
আল্লাহর এই পরিচয় জানার পর মানুষের উচিত একমাত্র তাঁর কাছেই মাথা নত করা, তারই আইন ও বিধান অনুযায়ী জীবন গঠন করা এবং অন্য কোনো শাসক বা প্রভুর কাছে আত্মসমর্পণ না করা। ইবাদতের এই তিনটি স্তরই আল্লাহর একক অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বীকৃতি বহন করে।
কুরআনে আরও বলা হয়েছে, আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর আলো। এই আলোর ব্যাখ্যায় তিনি এমন একটি চিত্র তুলে ধরেছেন যা নিঃসন্দেহে মানুষের হৃদয়ে আল্লাহর প্রভূত্ব ও করুণা সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি তৈরি করে। এটি এমন এক আলো, যা সবদিক থেকে পরিপূর্ণ ও শুদ্ধ, যা আল্লাহ যাকে চান তারই অন্তরে প্রবেশ করান।
সবশেষে হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী দোয়া করেন, মহান আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে তার হুকুম মেনে চলার তাওফিক দান করেন এবং তারই নির্দেশনায় জীবন পরিচালনার শক্তি দান করেন। আমিন।