ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সব ধরনের বাণিজ্যিক ও আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ফ্রানচেসকা আলবানিজ। শুক্রবার (৪ জুলাই) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের অর্থনীতি আসলে একটি "গণহত্যার অর্থনীতি", যা আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং করপোরেট মুনাফার ওপর নির্ভর করে চলছে। তাই এই সহায়তা বন্ধ করা এবং দেশটির ওপর পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। বৃহস্পতিবার জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে নিজের সর্বশেষ প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে এ কথা বলেন তিনি।
আলবানিজ তার প্রতিবেদনের শিরোনাম দিয়েছেন, “From Economy of Occupation to Economy of Genocide”—যার অর্থ ‘দখলদারির অর্থনীতি থেকে গণহত্যার অর্থনীতি’। এতে তিনি দেখিয়েছেন, কিভাবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক করপোরেট প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলের দখলদারি ও বসতি সম্প্রসারণে অংশ নিচ্ছে এবং লাভবান হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ত্র নির্মাতা, প্রযুক্তি কোম্পানি, ভারী যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারী এবং ব্যাংকসহ বহু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এই দমন-পীড়নে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। কেউ নজরদারির প্রযুক্তি সরবরাহ করছে, কেউ সরাসরি অবৈধ বসতি গঠনে সহায়তা করছে, আবার কেউ সামরিক সহিংসতা ও মানুষ হত্যা থেকে মুনাফা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে আলবানিজ বলেন, "রাজনৈতিক নেতারা যখন গাজায় রক্তপাত থামাতে ব্যর্থ হচ্ছেন, তখন করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো এই হত্যাযজ্ঞ থেকে মুনাফা লুটছে।" তিনি জানান, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর তেল আবিবের শেয়ার বাজারে দর বেড়েছে অন্তত ২০০ শতাংশ, যা প্রায় ২২ হাজার কোটি ডলারের সম্পদ বৃদ্ধি।
আলবানিজের ভাষায়, "একটি জাতি যখন ধ্বংস হচ্ছে, তখন আরেকটি জাতি সমৃদ্ধ হচ্ছে—এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে গণহত্যাও কারও কারও জন্য লাভজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।"
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত, এবং স্কুল-হাসপাতালসহ বেসামরিক স্থাপনাগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে ফিলিস্তিনের ৮৫ শতাংশ এলাকা ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।