প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ১১:২
টানা কয়েক সপ্তাহের হামলা-পাল্টা হামলার পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান। এই যুদ্ধবিরতি সীমান্ত এলাকায় আংশিক শান্তি ফিরিয়ে আনলেও এর ভয়াবহ চিহ্ন এখনো স্পষ্ট জম্মু-কাশ্মিরের গ্রামে গ্রামে।
পাকিস্তানি হামলায় ভারতের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ধ্বংস হয়ে গেছে ১০ হাজারেরও বেশি বসতঘর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক গ্রাম, বিশেষ করে পুঞ্চ, কুপওয়ারা, বারামুলা ও রাজৌরি জেলায়। এসব জায়গার অধিকাংশ পরিবার এখন গৃহহীন।
বিশেষ করে পুঞ্চ জেলার অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। এখানে নিহতদের মধ্যে ১৪ জনই এই জেলার বাসিন্দা। ন্যাশনাল কনফারেন্সের এমপি আজাজ জান জানিয়েছেন, জেলার ৬০টির বেশি পঞ্চায়েতে প্রায় প্রতিটি বাড়ি শেলিংয়ে গুঁড়িয়ে গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এত বড় পরিসরে গোলাবর্ষণ এর আগে কখনও দেখেনি এই অঞ্চল। একেকটি শেল বিস্ফোরণে পুরো পাড়া উড়ে গেছে। কাঠ ও টিনের তৈরি পাহাড়ি ঘরগুলো এই আক্রমণ ঠেকাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
এলাকাটি ভূকম্পনপ্রবণ হওয়ায় ধ্বংসপ্রাপ্ত এসব ভবন এখন ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে। এমপি আজাজ জান বলছেন, “একটি হালকা ভূমিকম্পই পুরো এলাকাকে ধ্বংস করতে পারে।”
এদিকে উরি ও কারনায়ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কারনায় ধ্বংস হয়েছে শতাধিক ঘর এবং উরিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৫৮টিরও বেশি বাড়ি। তাংদার গ্রামের বাসিন্দা জাহিদ রাশিদ বলেন, “আমরা বাঙ্কারে ছিলাম, বাইরে এসে দেখি আমাদের পুরো গ্রামই ভেঙে পড়েছে।”
এ অবস্থায় রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রের কাছে দাবি উঠেছে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মাসির আসলাম ওয়ানিও স্বীকার করেছেন ক্ষতির কথা এবং পুনর্বাসনের জন্য তহবিল গঠনের আশ্বাস দিয়েছেন।
এখন প্রশ্ন, সীমান্তে থেমে থাকা এই যুদ্ধবিরতির পেছনে কতদিন স্থিতিশীলতা থাকবে? আর ধ্বংসস্তূপে পড়ে থাকা হাজারো পরিবার কি আদৌ আগের মতো জীবন গড়তে পারবে?