প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ১৩:৪৭
সিলেট অঞ্চলের চা শিল্প বর্তমানে নানা সংকটে জর্জরিত, বিশেষত চা নিলাম ব্যবস্থার পুরনো কাঠামো, বাজারে সিন্ডিকেটের দখলদারিত্ব এবং ভারতীয় সস্তা চায়ের আগ্রাসনে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সরকারের নীরব অবস্থান এ সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে। চা বাগানের মালিক ও বিনিয়োগকারীরা একের পর এক সমস্যার মুখে পড়ে পড়েছেন।
বিশেষ করে সিলেটের বুরজান ও ফুলতলা চা বাগান নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। এই দুটি বাগানে প্রবাসী বিনিয়োগ রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মুহম্মদ রফিকের পরিবার। বর্তমানে তাঁর সন্তান রেবেকা রফিক ও জামিল রফিক বাগান পরিচালনার দায়িত্বে থাকলেও পারিবারিক জটিলতা ও অসুস্থতা তাঁদের সক্রিয় সম্পৃক্ততায় বাধা দিচ্ছে।
নর্থ সিলেট ভ্যালি টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নোমান হায়দার চৌধুরী এক ভার্চুয়াল আলোচনায় জানান, চা শিল্পের জটিলতা দিন দিন বাড়ছে এবং দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এর ধ্বংস অনিবার্য। তিনি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন যেন দ্রুত স্থায়ী সমাধানের পথে অগ্রসর হওয়া যায়।
রেবেকা রফিক এক চিঠিতে বাংলাদেশ টি বোর্ডকে জানিয়েছেন, শ্রমিকদের মজুরি মেটাতে ব্যাংক ঋণের প্রয়োজন, যার জন্য পরিচালনা বোর্ডকে সময় ও সহযোগিতা দেওয়া জরুরি। তিনি টি বোর্ড ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও বৃটিশ হাই কমিশনের সহানুভূতি কামনা করেছেন।
জানা গেছে, গত চার দশক ধরে মুহম্মদ রফিক তাঁর নিজস্ব অর্থে ফুলতলা ও বুরজান চা বাগান পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রবাসী এই বিনিয়োগ বিপর্যয়ের মুখে। ইতোমধ্যে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় চা শিল্পের সংকট নিয়ে অনেক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও কার্যকর সমাধান আসেনি।
গত ৪ মে চা শ্রমিকরা বকেয়া মজুরির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে, যা সাময়িকভাবে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে টি বোর্ড ও জেলা প্রশাসন অচলাবস্থা নিরসনে প্রতিনিধি নিয়োগ করে উদ্যোগ নেয়, তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন মালিক পক্ষকে সম্পৃক্ত করা ছাড়া স্থায়ী সমাধান আসবে না।
এই পরিস্থিতিতে সবাই আশা করছেন, নতুন সরকার চা শিল্পকে রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করবে এবং বৃটিশ হাই কমিশন ও প্রধান উপদেষ্টা তাঁদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন। তা না হলে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী চা শিল্প বিলুপ্তির পথে এগোবে।
মেটা কী-ওয়ার্ডস: