প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ১৪:১
রাজনৈতিক অঙ্গনে বড়সড় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাম্প্রতিক ঘোষণা। সোমবার রাজশাহী আঞ্চলিক লোক প্রশাসন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত একটি কর্মশালায় নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ স্পষ্ট করে জানান, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে এবং তা প্রত্যাহার না হলে দলটি কোনোভাবেই আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
তিনি জানান, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং ইসির তরফ থেকেও দলটির নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে। নিবন্ধন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার না হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনও সুযোগ নেই বলেই তিনি সাফ জানিয়ে দেন।
ওই কর্মশালার মূল বিষয় ছিল ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ-২০২৫, পরবর্তী পর্যালোচনা ও টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা’। নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ, রাজশাহীর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন ও বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ।
কর্মশালার আলোচনায় উঠেছিল আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—আওয়ামী লীগ ছাড়া কি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব? এ প্রশ্নের উত্তরে কমিশনার বলেন, এই বিষয়ে মন্তব্য করার উপযুক্ত সময় এখনও আসেনি। তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন প্রধান উপদেষ্টার নির্ধারিত সময় অনুযায়ী নির্বাচন বাস্তবায়নে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় দলটি নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে আপাতত ছিটকে পড়েছে। এটি দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ও নির্বাচনী পরিবেশে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোরালো আলোচনা।
সরকারি সূত্র মতে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটি কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারবে না। এই নিষেধাজ্ঞা কতদিন বহাল থাকবে, তা নির্ভর করছে বিচারপ্রক্রিয়ার অগ্রগতির ওপর।
বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচনের চিত্র ঘিরে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা নতুন করে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, একটি ঐতিহাসিক দলের নির্বাচন থেকে বাদ পড়া নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
এই প্রেক্ষাপটে আগামীর রাজনীতি ও নির্বাচনের চিত্র কোন দিকে মোড় নেয়, সে দিকেই তাকিয়ে দেশের মানুষ।