প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৫, ১০:২৬
গত ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আক্রমণে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০০ ফিলিস্তিনি। একইসঙ্গে প্রায় ৩ লাখ মানুষকে জোরপূর্বক গাজা শহরের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস।
শনিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়, যা রোববার আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা আনাদোলুতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। গাজার মিডিয়া অফিসের মতে, এই হামলা ইসরায়েলের রক্তাক্ত ইতিহাসে নতুন এক ভয়াবহ অধ্যায় যোগ করেছে এবং এটি একটি পরিকল্পিত গণহত্যারই বহিঃপ্রকাশ।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, শুধু উত্তরের গাজা গভর্নরেটেই গত দুই দিনে দুশোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী এক হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস করেছে, যেখানে হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন।
মিডিয়া অফিস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েলি সেনারা ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকর্মীদের বাধা দিচ্ছে, ফলে অনেক মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে রয়েছে। প্রায় ১৪০ জনের মরদেহ এখনও উদ্ধার সম্ভব হয়নি, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের জ্বলন্ত উদাহরণ।
এছাড়া, জাবালিয়া, বাইত লাহিয়া ও আশপাশের এলাকায় শরণার্থীদের অস্থায়ী তাঁবুগুলোতে ড্রোন হামলা চালিয়ে সেগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বর্বর ঘটনার সময় আন্তর্জাতিক মহলের নিরবতা ও কার্যত সহযোগিতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মিডিয়া অফিস।
গাজার শহরে আশ্রয়কেন্দ্রের সংকট এবং রাস্তায় হাজার হাজার মানুষের বসবাসের কথাও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। বিশেষ করে আল-জালাআ স্ট্রিট ও আল-সাফতাউই এলাকার পরিস্থিতি আরও করুণ। খাদ্য, পানি, ওষুধ ও বিদ্যুৎ ছাড়া এরা নিদারুণ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে গণহত্যা বন্ধ, জরুরি চিকিৎসা সহায়তা ও উদ্ধার কার্যক্রম নিশ্চিত করতে, অবরোধ তুলে মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দিতে এবং ইসরায়েলি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সফরের সময় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহতের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। সফরের চার দিনে প্রাণ গেছে ৩৭৮ জনের, যা পূর্ববর্তী চার দিনের তুলনায় চারগুণ বেশি।