প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ১২:১২
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর টানা বিমান হামলায় ফের রক্তে ভিজলো গাজা উপত্যকা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বিমান অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১১৫ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২১৬ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে উঠে এসেছে এই মর্মান্তিক চিত্র।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু মানুষ চাপা পড়ে আছেন, যারা জীবিত না মৃত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ফলে নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় আইডিএফ-এর অভিযান শুরু হয়। চলমান হামলার মধ্যেই গত দেড় বছরে উপত্যকায় মোট প্রাণহানি পৌঁছেছে ৫৩ হাজার ১১৯ জনে এবং আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ২১৪ জনে। এই নিহত ও আহতদের প্রায় ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু, যা পরিস্থিতির ভয়াবহতাকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই দীর্ঘমেয়াদি সামরিক অভিযানের সূচনা ঘটে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন হামাস হঠাৎ করে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালায়। সেই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। জবাবে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেও তা টিকেছিল মাত্র দুই মাস। ১৮ মার্চ থেকে আবারও শুরু হয় ইসরায়েলের দ্বিতীয় দফা সামরিক অভিযান। এই দ্বিতীয় ধাপে এখন পর্যন্ত প্রাণ গেছে আরও প্রায় ৩ হাজার ফিলিস্তিনির এবং আহত হয়েছে ৮ হাজারের বেশি।
হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ২৫১ জনের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের উদ্ধারে অভিযান চলবে। এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠন বারবার হামলা বন্ধের আহ্বান জানালেও তা উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।
এদিকে, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা দায়ের করা হলেও প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত গাজায় অভিযান চলবে এবং তারা কোনও চাপে নতি স্বীকার করবে না।