সিনওয়ার হত্যার ‘মাস্টারমাইন্ড’ ইসরাইলি দুই কর্মকর্তার মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার ২৫শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৫:২৭ অপরাহ্ন
সিনওয়ার হত্যার ‘মাস্টারমাইন্ড’ ইসরাইলি দুই কর্মকর্তার মৃত্যু

হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড সম্প্রতি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে ইসরাইলি বাহিনীর দুই সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা নিহতের দৃশ্য দেখানো হয়েছে। নিহত কর্মকর্তারা হলেন ইসরাইলি সেনা কমান্ডার মেজর ডেভির সিয়ন রাভাহ এবং তার ডেপুটি এইতান ইসরাইল শিকনাজি। হামাস দাবি করেছে, এই দুই কর্মকর্তা তাদের সাবেক প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।  


‘ডেথ অ্যাম্বুশ সিরিজ’ নামের এই ভিডিওটি এ ধরনের আরও ঘটনার প্রথম অংশ বলে উল্লেখ করেছে হামাস। তাদের দাবি অনুযায়ী, ৬ জানুয়ারি গাজার উত্তরের বেইত হানুন শহরে স্থাপিত একটি বোমা বিস্ফোরণে এই দুই কর্মকর্তা নিহত হন। ইসরাইলি বাহিনী যখন বেইত হানুন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছিল, তখন এই হামলা চালানো হয়। হামাস জানিয়েছে, এ হামলায় আরও কয়েকজন ইসরাইলি সৈন্য আহত হয়েছেন।  


হামাস আরও জানিয়েছে, বেইত হানুনের আল-জাইতুন এলাকায় আরও একটি অভিযানে ইসরাইলি বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভিডিওতে দেখানো ঘটনা মূলত গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির আগের সময়ের। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির আগে দখলদার ইসরাইলের দীর্ঘ ১৫ মাসের সামরিক অভিযানে ৪৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহতের সংখ্যা আরও লক্ষাধিক।  


যদিও গাজায় বর্তমানে যুদ্ধবিরতি চলছে এবং বন্দি বিনিময় কার্যক্রম চলছে, ইসরাইলের সামরিক অভিযান থেমে নেই। অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের ওপর সাম্প্রতিক উচ্ছেদ এবং সামরিক অভিযানে গত পাঁচ দিনে অন্তত ১৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বিশেষ করে জেনিন শহর ও এর শরণার্থী শিবিরে চালানো অভিযানে ইসরাইলি বাহিনীকে ‘যুদ্ধের মতো’ কৌশল ব্যবহারের অভিযোগ করেছে জাতিসংঘ।  


গাজায় শান্তি বিরাজমান থাকলেও অধিকৃত পশ্চিম তীরের সামরিক উত্তেজনা নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, যদি ইসরাইল তার সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখে, তাহলে তারা নিজেদের প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম আরও তীব্র করবে।  


গাজায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান সংঘাত, প্রাণহানি এবং সামরিক অভিযান ফিলিস্তিনি জনগণের জীবনে চরম দুর্ভোগ নিয়ে এসেছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা এর প্রধান ভুক্তভোগী। আন্তর্জাতিক মহল থেকে ইসরাইলের এই সামরিক কার্যক্রমের নিন্দা জানানো হলেও পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।  


হামাসের সাম্প্রতিক ভিডিও এবং তাদের প্রতিরোধের ইঙ্গিত নতুন করে গাজার পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন অনেকেই।