ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, দেশে ফ্যাসিস্ট সরকার পালিয়ে গেলেও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ও সিন্ডিকেট করে জনদুর্ভোগ অব্যাহত রয়েছে। এসব অনিয়ম দেশের মানুষের ন্যায্য অধিকার কেড়ে নিচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। রোববার রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় মজলিসে আমেলার মাসিক বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের রাজনীতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও কল্যাণের জন্য। দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি কিংবা সিন্ডিকেট কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের কাজ হতে পারে না। যারা এই কাজে যুক্ত তারা নিজেদের নৈতিক অবস্থান হারিয়েছে। জনগণের জন্য কাজ করার পরিবর্তে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করাই তাদের লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। এজন্য দেশের মানুষ তাদের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছে।
বৈঠকে তিনি উল্লেখ করেন, সুষ্ঠু ও ন্যায়ভিত্তিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ জনগণের কষ্ট লাঘব করার জন্য সৎ ও নৈতিক নেতৃত্ব অপরিহার্য। তিনি রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং এ বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।
সভায় আরও বক্তব্য দেন দলটির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী। তিনি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সঠিক নেতৃত্বের অভাবে দেশের মানুষ এখন এক অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে রয়েছে। মানুষ নিজের নিরাপত্তা ও মৌলিক অধিকার নিয়ে শঙ্কিত।
মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, দুর্নীতি বন্ধে প্রশাসনকে কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ একসঙ্গে কাজ না করলে দেশের অগ্রগতি সম্ভব নয়। দুর্নীতি দমন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। জনগণের আস্থা অর্জন করতে হলে প্রতিটি খাতে স্বচ্ছতা আনতে হবে।
সভায় অন্যান্য বক্তারা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, ও সিন্ডিকেটের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। তারা বলেন, দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন ব্যাহত হবে। রাজনীতিতে নৈতিকতা ও মানবিকতার চর্চা অপরিহার্য। নেতাকর্মীদের অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
চরমোনাই পির তার বক্তব্যে আরও বলেন, সঠিক নেতৃত্ব ছাড়া মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। প্রতিটি নেতা-কর্মীকে জনগণের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে এগিয়ে আসতে হবে। তারা যেন নিজের স্বার্থের পরিবর্তে জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়। ন্যায়পরায়ণ ও সৎ নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যৎ নিরাপদ করা সম্ভব।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়েরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তারা সকলেই দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।