মেহেরপুরে জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে মতবিনিময়

নিজস্ব প্রতিবেদক
এস এম তারেক হোসেন, জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর
প্রকাশিত: বুধবার ২২শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৯:৫০ অপরাহ্ন
মেহেরপুরে জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে মতবিনিময়

মেহেরপুরে জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত ‘জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ সপ্তাহ’ উদযাপনের অংশ হিসেবে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কর্মসূচি ১৯ থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত পালিত হচ্ছে। সভায় ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতা ও সেবার মান উন্নয়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।  


সভায় সভাপতিত্ব করেন সিভিল সার্জন ডা. মহী উদ্দিন আহমেদ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক রাশেদুল বশির। আরও বক্তব্য রাখেন মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হযরত আলী, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক এ জে এম সিরাজুম মুনির এবং জেলা তথ্য অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন।  


সভায় সিভিল সার্জন ডা. মহী উদ্দিন বলেন, জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার মরণব্যাধি হলেও প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করা গেলে এটি সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগের দৃশ্যমান কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অপরিহার্য। তিনি আরও বলেন, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এবং সচেতনতার মাধ্যমে অনেক মা-বোনের জীবন বাঁচানো সম্ভব।  


গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. সুরাইয়া শারমিন পুষ্প এবং ডা. উম্মে হোমায়রা আয়েশা তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন, জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে নারীদের সচেতন হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর উদ্যোগ বাড়াতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগ শনাক্ত করার জন্য স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাড়ানোর ওপরও গুরুত্ব দেন তারা।  


মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে নারীদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, নিয়মিত চেকআপ এবং প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ প্রতিটি জেলা এবং উপজেলার জন্য একটি মডেল হতে পারে।  


সভায় বক্তারা উল্লেখ করেন, প্রতিরোধ সপ্তাহ উদযাপনের মাধ্যমে নারী স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কাছে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন।  


স্বাস্থ্য খাতে এমন উদ্যোগের মাধ্যমে নারীদের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখা সম্ভব বলে মনে করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক এ জে এম সিরাজুম মুনির। তিনি বলেন, এই কার্যক্রম ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করা যেতে পারে।  


সভায় বক্তারা সম্মিলিতভাবে সবাইকে আহ্বান জানান, নারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পরিবার, সমাজ ও সরকারের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এ ধরনের কার্যক্রমের ফলে জরায়ু ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।