আগুনের গুজবে ট্রেন থেকে ঝাঁপ, কাটা পড়ে ১১ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌম্যা সাহা , কলকাতা প্রতিনিধি ভারত
প্রকাশিত: বুধবার ২২শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৯:৪২ অপরাহ্ন
আগুনের গুজবে ট্রেন থেকে ঝাঁপ, কাটা পড়ে ১১ জনের মৃত্যু

ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের জলগাঁও জেলার পারধাদে স্টেশনের কাছে ট্রেন দুর্ঘটনায় অন্তত ১১ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছে। বুধবার বিকেলে পুষ্পক এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনের গুজব ছড়িয়ে পড়লে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। অনেকে প্রাণ বাঁচাতে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়েন। এসময় বিপরীত দিক থেকে আসা কর্ণাটক এক্সপ্রেসের ধাক্কায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।  


মধ্য রেলওয়ের প্রধান মুখপাত্র স্বপ্নিল নীলা জানান, পুষ্পক এক্সপ্রেসের আগুনের গুজবের কারণে যাত্রীরা লাফিয়ে পড়েন এবং বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই ১১ জন নিহত হন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।  


এক রেল কর্মকর্তা জানান, ট্রেনের একটি কোচে 'হট এক্সেল' বা 'ব্রেক-বাইন্ডিং'-এর কারণে স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি হয়েছিল। এতে যাত্রীরা ভয় পেয়ে যান এবং কেউ কেউ চেইন টেনে ট্রেন থামানোর চেষ্টা করেন। অনেকেই ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়লে বিপরীত দিক থেকে আসা কর্ণাটক এক্সপ্রেস তাদের পিষে ফেলে।  


দুর্ঘটনার পর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নাভিস শোক প্রকাশ করেন। তিনি জেলা প্রশাসন ও রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আহতদের চিকিৎসার জন্য ৮টি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে এবং কাছাকাছি হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।  


মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হতাহতদের পরিবারকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আহতদের চিকিৎসার পাশাপাশি দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখার কাজ চলছে।  


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনের ভেতরে আগুন লাগার গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর যাত্রীরা ভয়ে অসহায়ভাবে ট্রেন থেকে লাফ দেন। দ্রুতগামী কর্ণাটক এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মুহূর্তেই প্রাণহানি ঘটে। অনেকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  


ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ ও রেলওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মহারাষ্ট্র রাজ্যের এই ঘটনায় রেল নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।  


এই দুর্ঘটনা রেলওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলো তুলে ধরেছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।