বনানীতে ডাকাতির প্রস্তুতিতে ধরা পড়লেন দুই সেনাসদস্যসহ ৪ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বুধবার ২২শে জানুয়ারী ২০২৫ ১০:২৭ অপরাহ্ন
বনানীতে ডাকাতির প্রস্তুতিতে ধরা পড়লেন দুই সেনাসদস্যসহ ৪ জন

বনানীতে ডাকাতির পরিকল্পনার সময় দুই সেনাসদস্যসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার গভীর রাতে বনানী ৬ নম্বর সড়কের বিদ্যুৎ অফিসের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়। পুলিশের সন্দেহ হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং ব্যাগ তল্লাশি করে সেনাবাহিনীর পোশাক, বুট, র‌্যাঙ্ক ব্যাজ, তালা ভাঙার সরঞ্জাম এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।  


গ্রেফতার চারজনের মধ্যে দুইজন সেনাসদস্য। একজন কর্পোরাল এবং অন্যজন সৈনিক পদে কর্মরত। তাদের সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আইএসপিআর নিশ্চিত করেছে যে, এ দুই সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে সেনা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাকি দুইজনের মধ্যে শেরপুরের সালাম শেখ ও গাজীপুরের সাইবেল জন সাভার রোজারিও নামে দুজন রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।  


পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে ১০-১৫ জন অবস্থান করছিল। টহল পুলিশের সন্দেহ হলে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় উপস্থিত আরও দুই সেনাসদস্যসহ তিনজন পালিয়ে যান। গ্রেফতার ব্যক্তিদের কথাবার্তায় অসংলগ্নতা দেখে পুলিশ তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে। পরে ডাকাতির প্রস্তুতির দায়ে তাদের আটক করা হয়।  


বনানী থানার ওসি রাসেল সরোয়ার জানিয়েছেন, গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে উপস্থিতদের মধ্যে একজন নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিক দাবি করেছেন। তার কাছে একটি ক্যামেরা ও পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। তদন্তের মাধ্যমে এর সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে।  


পুলিশ আরও জানায়, ডাকাতির পরিকল্পনায় ব্যবহার করা মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়েছে। এতে সেনাসদস্যদের উপস্থিতি ডাকাতির ঘটনা নিয়ে আরও প্রশ্ন তৈরি করেছে। বাকি জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এ চক্রটি বেশ কয়েকদিন ধরে ঢাকা শহরে ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল।  


গ্রেফতারদের একজনের বিরুদ্ধে এর আগে কয়েকটি প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। অপরদিকে, পালিয়ে যাওয়া সেনাসদস্যদের শনাক্ত করতে সেনাবাহিনীর সহায়তায় তদন্ত চলছে। তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।  


আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, এ ধরনের ঘটনায় জড়িত সেনাসদস্যদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে। জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে পূর্ণ সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।  


এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নগরজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষকে এ ধরনের অপরাধী সম্পর্কে তথ্য দিতে এবং সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।