কালিয়াকৈরে মাদক বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
খোরশেদ আলম, কালিয়াকৈর (গাজীপুর)প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার ২০শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৬:১৪ অপরাহ্ন
কালিয়াকৈরে মাদক বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ

গাজীপুরের কালিয়াকৈরের ঐতিহ্যবাহী চিনাইল পাগলা বাড়ির বার্ষিক মেলা ঘিরে মাদক বাণিজ্যের অভিযোগে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করেছে। সোমবার সকালে মেলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে স্থানীয়রা দ্রুত মাদক ব্যবসা বন্ধের দাবি জানায়। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেলা কমিটির আশ্বাসে তারা এক দিনের আলটিমেটাম দিয়ে মিছিল শেষ করে।  


উপজেলার ঢালজোড়া ইউনিয়নের কেশব পাগলার আশ্রমে প্রতিবছরের মতো এই মেলা শুরু হয় ১৫ জানুয়ারি। হাজারো ভক্ত ও দর্শনার্থীর সমাগমে মেলা জমে উঠলেও মেলার পশ্চিম প্রান্তে খোলা মাঠে তাবু টানিয়ে গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবার মতো প্রাণঘাতী মাদক প্রকাশ্যে বিক্রি ও সেবন হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সহজলভ্য মাদকের কারণে তরুণ, যুবক, এমনকি বৃদ্ধ মাদকাসক্তরা এই আখড়ায় ভিড় জমাচ্ছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।  


স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রশাসনের কাছে বারবার জানানো সত্ত্বেও এখনো মাদক ব্যবসা বন্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে মেলার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এবং এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তাদের দাবি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতারা এই মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকায় অভিযোগগুলো প্রভাবশালী মহলের চাপে উপেক্ষিত হচ্ছে।  


এ বিষয়ে ঢালজোড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. গজ নবী জানান, মাদক ব্যবসার বিষয়টি তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন। এলাকাবাসীর দাবি মেনে দ্রুত মাদকের আখড়া উচ্ছেদ এবং মাদক ব্যবসা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে মাদক ব্যবসায় তার পরিষদের কোনো সদস্য জড়িত নয় বলেও তিনি দাবি করেন।  


মেলার মাদক ব্যবসার বিষয়ে কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিয়াদ মাহমুদ বলেন, মেলায় মাদক ব্যবসার অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং মাদকের আখড়া উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে বিক্ষোভ মিছিলের খবর তিনি অস্বীকার করেন।  


স্থানীয়দের মতে, ঐতিহ্যবাহী এই মেলাকে ঘিরে মাদকের রমরমা বাণিজ্য এলাকার যুবসমাজকে ধ্বংস করছে। এই বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, মাদক ব্যবসা বন্ধ না হলে মেলার ঐতিহ্য ধ্বংস হতে পারে।  


এদিকে, মেলা কমিটি ও প্রশাসন একে অপরকে দোষারোপ করছে। দ্রুত সমাধান না হলে স্থানীয়দের বিক্ষোভ আরও তীব্র হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগই একমাত্র পথ বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।