কুড়িগ্রামের উলিপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে মারধরের ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মতি শিউলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে উলিপুর পৌর শহরের মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান ফটকের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত বছরের ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং মসজিদুল হুদার সামনে থেকে আন্দোলনরত ছাত্রদের তুলে নিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধর করেন। এই ঘটনায় গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন মোসাব্বির হোসেন বাদী হয়ে ৪৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১৮০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার দীর্ঘ সময় পর তদন্তের ভিত্তিতে সোমবার মতি শিউলীকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। একই সঙ্গে তিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃত মতি শিউলীকে আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং সেখান থেকে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে এই গ্রেফতারের পর স্থানীয় পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একাংশ মনে করছে যে, দীর্ঘদিন ধরে এই মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও দায়ীদের বিচার না হওয়ায় সাধারণ মানুষ হতাশ ছিলেন। তবে শিউলীর গ্রেফতারে অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
এলাকার সাধারণ জনগণ মনে করছেন, এই ঘটনা উলিপুরের সামাজিক ভারসাম্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তারা চান, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করে এলাকায় শান্তি ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা হোক।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এ নিয়ে তারা আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ছাত্র আন্দোলন এবং এর ফলে সৃষ্ট সহিংসতার ঘটনাগুলো তদন্ত সাপেক্ষে বিচার হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।