প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যু; ভূঞাপুরের সেই ক্লিনিক সিলগালা

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফুয়াদ হাসান রঞ্জু, উপজেলা প্রতিনিধি, ভূঞাপুর- টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৭শে মে ২০২২ ০৩:৩৭ অপরাহ্ন
প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যু; ভূঞাপুরের সেই ক্লিনিক সিলগালা

টাঙ্গাইলে ভূঞাপুরে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের শিশু কনসালট্যান্ট ডা. অনামিকা সাহাকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়। 


কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- ডা. নিশাত সাঈদা ও ডা. মো. খাদেমুল ইসলাম। আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা  কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি ভূঞাপুর বাজারে অবস্থিত মা ক্লিনিক অ্যান্ড হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেয়।


এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান জানান, সিজারিয়ান করার সময় রোগী মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করে সিলগালা করে দিয়েছে। যাতে কর্তৃপক্ষ সেখানে তাদের কার্যক্রম চালাতে না পারেন। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে। সরকারি হাসপাতালের কোন চিকিৎসক জড়িত থাকলে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন খান বলেন, ঘটনা তদন্তে কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।  


উল্লেখ্য, গত বুধবার (২৬ মে) বিকেলে ভূঞাপুর উপজেলার খানুরবাড়ি গ্রামের লাইলী বেগমের প্রসব যন্ত্রণা হলে তার স্বজনরা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হাসপাতালের কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডা. রুপক রোগীর শারিরীক অবস্থা খারাপ থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। পরে সেখানে থাকা ক্লিনিকের দালাল শামছুর খপ্পরে পড়ে রোগীর স্বজনরা। কম টাকায় সিজার করানোর কথা বললে দরিদ্র রোগীর স্বজনরা দালালের কথামত মা ক্লিনিক এন্ড হাসপাতালে নিয়ে যায়।


এরপর ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। রাত ৮টার দিকে রোগীকে  অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই ক্লিনিকের সার্জারি চিকিৎসক ও ভুঞাপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) এনামুল হক সোহেল ও অ্যানেস্থিসিয়ার চিকিৎসক ডা. আল মামুন রোগীর চিকিৎসা শুরু করেন। এক পর্যায়ে অপারেশন থিয়েটারেই রোগী মারা যায়। ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্বজনদের না জানিয়ে রোগীর মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে টাঙ্গাইলে পাঠিয়ে দেয়ার সময় স্বজন ও স্থানীয়রা বাঁধা দেয়। অবস্থার বেগতি দেখে চিকিৎসক ও নাস সহ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়।