মানুষের অবস্থা, অবস্থান সব সময় এক রকম যায় না। পরিবেশ পরিস্থিতিও অনেক সময় পরিবর্তন হয়। কখনও মানুষের জন্য তা হয়ে উঠে অনুকূল আবার কখনও প্রতিকূল। এটাই দুনিয়াতে আল্লাহর চিরাচরিত নিয়ম। মহান আল্লাহ কুরআনে পাকে ইরশাদ করেন-
‘(হে রাসুল আপনি) বলুন, হে আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ২৬)মুমিন বান্দা কখনও কোনো বিপদ-আপদেই হতাশ হয় না। কোনো পেরেশানিই তাকে বিচলিত করতে পারে না। কারণ বিপদ-আপদ মহান আল্লাহর পক্ষতে মুমিন বান্দার জন্য এক মহাপরীক্ষা। আল্লাহ তাআলা নৈকট্য লাভে এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার বিকল্প নেই।
যুগে যুগে নবি-রাসুল, ওলি-আওলিয়া, আলেম-ওলামাগণ বহু পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন। যে যত বেশি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, আল্লাহর দরবারে তিনি ততবেশি মর্যাদার অধিকারী হয়েছেন।সুতরাং বিপদ-আপদ যত ছোটই হোক আর বড়ই হোক। দু’টি কাজের মাধ্যমে মুমিন বান্দার এ সমাধান খুঁজবে। চাই সে মুমিন বান্দা শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত হোক। আলেম কিংবা সাধারণ হোক। দু’টি উপায় সাহায্য চাইলে আল্লাহ তাআলা বান্দার সব বিপদ-আপদ সহজ করে দেবেন। আ তাহলো-তাকদিরের উপর ছেড়ে দেয়া।
তাকদিরের উপর অবিচল আস্থা এবং বিশ্বাস রাখা। এ কথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে আল্লাহর উপর ভরসা করতে হবে যে, ‘ভাল-মন্দ সব কিছু আল্লাহর পক্ষ থেকেই হয়। আর বান্দার উপকারের জন্যই তা সংঘটিত হয়। যা মানুষ বুঝতে না পারার কারণেই আহাজারি, রোনাজারি করে।
দোয়া করা।
সর্বাবস্থায়, সব ব্যাপারে মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করা। বিপদ-আপদ ও সংকট মোকাবেলায় আল্লাহর সাহায্যের কাছে দুনিয়ার কোনো সাহায্যই সমকক্ষ হতে পারে না। বিপদ-আপদ যত ছোট হোক আর বড় হোক। আল্লাহর সাহায্য কামনা করা।রাতের বেলা সাধারণ বাতাসে যদি কারো আলো নিভে যায় কিংবা বিদ্যুৎ চলে তাতেও আল্লাহকে স্মরণ করা আর বলা- ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। কোনো হাতাশা বা পেরেশানিতে পরলেও বলা- ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
যদি কোনো ব্যক্তি দোয়া না জানে!
মনে রাখতে হবে, যদি কোনো ব্যক্তি আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা কোনো দোয়া না জানে, তার এটিই যথেষ্ট যে-দুনিয়ার সব বিপদ-আপদে আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার নিয়তে ‘আল্লাহ, আল্লাহ’ জিকির করা। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলা তার বান্দার সহজ-কঠিন সব বিপদ দূর করে দেবেন।মহান আল্লাহ তাআলার ঘোষণাও এটি। আল্লাহ তাআলা বান্দাকে লক্ষ্য করে কুরআনে পাকে ঘোষণা করেন-`তোমাদের পালনকর্তা বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি (তোমাদের ডাকে) সাড়া দেব। যারা আমার ইবাদতে (হুকুম পালনে) অহংকার করে তারা শীঘ্রই লাঞ্জিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা মুমিন : আয়াত ৬০)
সুতরাং বিপদ যত বেশি এবং যত কঠিনই হোক না কেন, তাকদিরের উপর অগাধ আস্থা এবং বিশ্বাস রেখে আল্লাহর কাছে অন্তর থেকে সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে। তিনিই সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান এ বিশ্বাসে তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলে কোনো বান্দার আবেদনই বিফলে যাবে না। আল্লাহ তাআলা বান্দার সব বিপদ-আপদই দূর করে দেবেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ভালো-মন্দ সব বিষয়ে তাকদিরের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে তাঁরই কাছে সাহায্য চাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।