প্রকাশ: ৩ জুলাই ২০২৫, ২১:১১
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) একদিনে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গল সীমান্ত দিয়ে ৭১ জন বাংলাদেশিকে ঠেলে পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে বড়লেখার পাল্লাথল সীমান্ত দিয়ে ৪৮ জন ও শ্রীমঙ্গলের কাকমারা সীমান্ত দিয়ে ২৩ জনকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করা হয় বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বড়লেখা সীমান্তে আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন ১৫ জন পুরুষ, ১৫ জন নারী ও ১৮ জন শিশু। বিজিবির ৫২ ব্যাটালিয়নের সূত্র জানায়, পাল্লাথল পুঞ্জি এলাকায় টহলের সময় এদেরকে আটক করা হয়, যারা ভারতের অভ্যন্তরে চিকিৎসা ও কাজের উদ্দেশ্যে অনুপ্রবেশ করেছিল।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা কুড়িগ্রাম ও যশোর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে গিয়েছিল এবং সেখান থেকে বিএসএফ তাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। আটককৃতদের মধ্যে যশোর, বাগেরহাট, চাপাইনবাবগঞ্জ, বরগুনা, বরিশাল ও কুড়িগ্রাম জেলার বাসিন্দা রয়েছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের বড়লেখা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্যদিকে একই দিন ভোরে শ্রীমঙ্গলের কাকমারা সীমান্ত দিয়ে ২৩ জনকে পুশ-ইন করে বিএসএফ। বিজিবি জানায়, কাকমারাছড়া রাবার বাগানসংলগ্ন জঙ্গলপথ দিয়ে রাতের আঁধারে বিএসএফ সদস্যরা তাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়।
আটককৃতদের মধ্যে ৯ জন শিশু, ৯ জন নারী ও ৫ জন পুরুষ রয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন মো. ইমরান শেখ, মোছা. রুপা খাতুন, মোছা. শামীমা খাতুন, মোছা. আমিনা খাতুন, মো. বিপ্লব মঈন উদ্দিন, মোছা. রতœা খাতুন, মো. আকাশ, মো. পারভেজ, মো. অলিউর শেখ, মো. রবিউলসহ আরও অনেকে। তারা মাদারীপুর, খুলনা, কুড়িগ্রাম ও বাগেরহাট জেলার বাসিন্দা। শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিজিবি আটককৃতদের বিকেলে থানায় হস্তান্তর করেছে এবং তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৫ জুন একই সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ ১৯ জনকে পুশ-ইন করেছিল। তখন পুলিশ ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে নারী ও শিশুদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং যাচাই-বাছাই শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এদিকে স্থানীয় সূত্র জানায়, একই দিন জেলার কুলাউড়ার মুরইছড়া ও কমলগঞ্জের ধলই সীমান্ত দিয়েও কয়েকজনকে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ, তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৫২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আপাতত তারা বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গলের পুশ-ইন নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং এ ঘটনায় আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে।