মহান আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া কবুলের জন্য দরূদ শরীফ পাঠ করা খুবই জরুরি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৮ই অক্টোবর ২০১৯ ০৩:২০ অপরাহ্ন
মহান আল্লাহ পাকের কাছে দোয়া কবুলের জন্য দরূদ শরীফ পাঠ করা খুবই জরুরি!

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ শরীফ পাঠই হলো দোয়া কবুলের উপাদান। দরূদ শরীফ পাঠের বরকতেই আল্লাহ তায়ালা মানুষের দোয়া কবুল করেন। দরূদ হলো আল্লাহর নিকট প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য রহমত বর্ষণের দোয়া করা; তাঁর প্রতি শান্তির ধারা অবিরাম অব্যাহত রাখার প্রার্থনা করা।

বিশ্বনবীর প্রতি দরূদ শরীফ পাঠের গুরুত্ব তুলে ধরে আল্লাহ তায়ালা কোরআনে কারীমে ইরশাদ করেন, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবীর ওপর রহমত বর্ষণ করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণ (নিষ্পাপ) নবীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন; হে ঈমানদারগণ তোমরা ও নবীর ওপর দরূদ পাঠ কর এবং তাঁর প্রতি সালাম পাঠাও। (সুরা আহজাব : আয়াত ৫৬)

প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ পাঠ করে মানুষ যদি নিজেদের জন্য কোনো দোয়া করে, আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা ঐ বান্দার দোয়া কবুল করেন। কারণ যারা দরূদ শরীফ ব্যতিত আল্লাহ তায়ালার নিকট দোয়া করে তাদের দোয়া লুকায়িত অবস্থায় থাকে। হাদিসে এসেছে-

হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে মারফুভাবে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ওপর দরূদ শরীফ পাঠ না করা পর্যন্ত প্রতিটি দোয়া লুকায়িত অবস্থায় থাকে। (বাইহাকি, জামিউস সগীর)

অন্য হাদিসে এসেছে- হজরত ফাদালাহ ইবনে ওবাইদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে তার নামাজের পর দোয়া করতে শুনলেন, কিন্তু সে ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ শরীফ পাঠ করেনি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, এ ব্যক্তি তাড়াহুড়া করেছে।

তারপর তিনি ঐ ব্যক্তিকে ডাকলেন এবং তাকে বা অন্য কাউকে বললেন- ‘তোমাদের কেউ নামাজ আদায় করলে সে যেন আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর গুণগান করে; তারপর নবীর প্রতি দরূদ শরীফ পাঠ করে; তারপর তার মনের কামনা অনুযায়ী দোয়া করে। (তিরমিজি, আবু দাউদ)

পরিশেষে

উল্লেখিত হাদিস থেকে বুঝা যায় যে, দোয়া করার আদব হলো আল্লাহর প্রশংসা করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ শরীফ পাঠ করা। অতপর মনের সকল চাহিদা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকট পেশ করা। তাছাড়া হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদিস থেকে বুঝা যায় যে, দরূদ শরীফ পাঠ করা ব্যতিত দোয়া করলে তা আল্লাহর নিকট না পৌছে লুকায়িত অবস্থায় থাকে।

সুতরাং আল্লাহ তায়ালার নিকট প্রার্থনা বা দোয়া করার পূর্বে আল্লাহর গুণগান এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দরূদ শরীফ পাঠ করে দোয়া করা। আশা করা যায়, আল্লাহ তায়ালা এ পদ্ধতিতে দোয়া করলে বান্দার দোয়া কবুল করবেন।

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিখানো পদ্ধতিতে তাঁর নিকট মনের সকল চাওয়া-পাওয়ার আবেদন করার তাওফিক দান করুন। দরূদ শরীফের ফজিলত ও বরকত আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।

লেখকঃ হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী, প্রিন্সিপালঃ- শাহজালাল রহ, ৩৬০ আউলিয়া লতিফিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা উপশহর সিলেট।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব