প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ০:১
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ রবিউল ইসলামকে বদলি করা হয়েছে। তাকে পদোন্নতি দিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব (শাখা প্রধান) হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবুল হায়াত মোঃ রফিক স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আগামী ২২ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে, অন্যথায় স্ট্যান্ড রিলিজ করা হবে।
ইউএনওর বদলীর খবর ছড়িয়ে পড়তেই কুয়াকাটা এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা যায় স্বস্তি ও উচ্ছ্বাসের বন্যা। মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টার দিকে স্থানীয় ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ এবং মসজিদের মুসুল্লিরা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে আনন্দ মিছিল বের করেন।
মিছিলটি সৈকত থেকে শুরু হয়ে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কসহ পৌর এলাকার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ হয়। এরপর উপস্থিতদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পর এ পরিবর্তনে এলাকাজুড়ে স্বস্তির আমেজ দেখা যায়।
এর আগে ইউএনওর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন, ঝাড়ু মিছিল, সাংবাদিক সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছিলেন। তারা অভিযোগ করেন, সৌন্দর্য বর্ধনের নামে একাধিকবার উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ব্যবসায়ী হারুন মৃধা বলেন, “রবিউল ইসলাম একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তিনি উচ্ছেদ অভিযানের কারণে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে। এমনকি ৫ আগস্টের পর সাধারণ মানুষকে হয়রানি করেছেন।”
অন্যদিকে ব্যবসায়ী রুমি শরীফ অভিযোগ করেন, “ইউএনও তার শশুরের নামে কোটি টাকার জমি কিনেছেন। সমুদ্র সৈকতে বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।” তিনি ইউএনওর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত দাবি করেন।
কুয়াকাটা বাইতুল আরোজ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম কারী নজরুল ইসলাম বলেন, “ইউএনও সরকারি জমির নামে মসজিদের মার্কেট ভেঙে দিয়েছেন। সেখানে জেলা ব্র্যান্ডিং অফিসের নামে বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তুলে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।”
স্থানীয়রা ইউএনওর বদলীতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এ ঘটনায় কুয়াকাটা এলাকায় এক ভিন্নধর্মী আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।