প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ২১:৫০
কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার একটি গহীন জঙ্গল থেকে নিখোঁজ হওয়ার ৮ দিন পর হনুফা আক্তার নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত হনুফা দেবীদ্বার পৌর এলাকার বারেরা গ্রামের বাসিন্দা এবং কাইচপুর এলাকার একটি কারখানার শ্রমিক ছিলেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিন সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব একাই বহন করতেন তিনি। গত ৮ জুলাই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর থেকে
নিখোঁজ হন এবং তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। মঙ্গলবার সকালে গৌরসার গ্রামে এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জঙ্গলে লতি তুলতে গিয়ে নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে দেবীদ্বার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। লাশ শনাক্ত করেন নিহতের আত্মীয় লিপি আক্তার, যিনি ছবি দেখে হনুফার কাপড় চিনে ফেলেন। নিহতের বড় ছেলে জুয়েল মূন্সী জানান, মা দীর্ঘদিন ধরে পরিবার চালাতে নিজেই কাজ করতেন এবং সম্প্রতি ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেছিলেন, যদিও
কোম্পানির নাম পরিবার জানত না। দেবীদ্বার থানার উপপরিদর্শক মাজহারুল ইসলাম জানান, নিহতের মাথা, গলা এবং চোখের উপরে আঘাতের চিহ্ন ছিল, যা প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের আলামত বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, নিহত হনুফার ওই গ্রামে গোপনে বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টিও তদন্তাধীন রয়েছে। দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, মরদেহ
শনাক্ত হওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে সিআইডি ও পিবিআই’র দুটি দল কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, হত্যার উদ্দেশ্য ও খুনির পরিচয় শনাক্তে আমরা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়ালেও পুলিশ আশ্বস্ত করেছে যে দ্রুততম সময়ে এই রহস্য উদঘাটন হবে। ঘটনাটি জনমনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং অনেকেই হত্যাকাণ্ডের পেছনে
পারিবারিক অথবা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের সম্ভাবনার কথা বলছেন। সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচিত এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় এখন চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।