প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ১০:৫২
ঈদুল আজহার আগমন ঘনিয়ে আসতেই মুসলিম সমাজে কোরবানির বিভিন্ন মাসআলা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই জানার চেষ্টা করছেন, একটি পশুতে সর্বোচ্চ কতজন কোরবানি দিতে পারবেন এবং শরিক হওয়ার নিয়ম কী। ইসলামিক শরিয়তের আলোকে বিষয়টি খুবই স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এজন্য সঠিক জ্ঞান থাকা অত্যন্ত জরুরি, যাতে ইবাদতটি আল্লাহর সন্তুষ্টির সাথে গ্রহণযোগ্য হয়।
ছাগল, ভেড়া কিংবা দুম্বা—এই ধরনের ছোট পশু দ্বারা কেবল একজনই কোরবানি আদায় করতে পারেন। এগুলোতে একাধিক ব্যক্তি শরিক হতে পারবেন না। কারণ, এগুলোর গোশতের পরিমাণ এবং শরিয়তের নির্দেশনা অনুযায়ী এগুলো এক ব্যক্তির জন্য নির্ধারিত হয়েছে। তাই এইসব পশুতে কোরবানি দিলে তা শুধুই একজনের পক্ষ থেকেই হবে।
অপরদিকে, গরু ও উটের মতো বড় পশুতে একাধিক ব্যক্তি শরিক হওয়ার সুযোগ রয়েছে। একজন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাতজন পর্যন্ত মুসলিম ব্যক্তি একই পশুতে শরিক হতে পারেন। তবে এই শরিকির ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত মানা আবশ্যক। প্রথমত, প্রত্যেকের অংশ যেন সমান হয় এবং কারো অংশ যেন এক সপ্তমাংশের কম না হয়। অর্থাৎ সাতজনের বেশি ব্যক্তি যদি শরিক হন, তাহলে তা শরিয়তসম্মত কোরবানি হবে না।
এই শরিকির ক্ষেত্রে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, প্রত্যেক শরিকের নিয়ত স্পষ্ট থাকতে হবে। কারো নিয়ত যদি কোরবানি না হয়ে নিছক গোশত নেওয়ার উদ্দেশ্যে হয়, তাহলে পুরো কোরবানিই বাতিল হয়ে যাবে। তাই ইখলাস তথা আন্তরিকতা ও ইবাদতের উদ্দেশ্য থাকা অপরিহার্য।
ইসলাম ধর্মে ইবাদতের প্রতিটি দিক অত্যন্ত সুসংগঠিত ও নির্ধারিত। কোরবানি শুধু সামাজিক অনুদান নয়, এটি একান্ত ইবাদতও বটে। তাই শরিকির সময় নিয়মগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করাই ইসলামের দাবি। এতে ইবাদত শুদ্ধ ও পূর্ণতা লাভ করে।
আসন্ন ঈদুল আজহায় যারা গরু বা উটে শরিক হতে চান, তাদের উচিত আগে থেকেই পার্টি গঠন করে নির্ভরযোগ্যভাবে অংশ নির্ধারণ করা। এতে কোনো বিভ্রান্তি বা ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হবে না। বিশেষত সবার অংশ ও নিয়ত যেন শুদ্ধ থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
পরিশেষে বলা যায়, কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তাই এটি পালনের আগে শরিয়তের নির্দেশনা জানা এবং সঠিকভাবে পালন করাই আমাদের দায়িত্ব। এতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হবে এবং ইবাদতও পূর্ণতা পাবে।