প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৫, ২১:৫৪
শ্রীমঙ্গলের জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে এক কনভেনশন এবং লাল পতাকা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নেয় শত শত চা শ্রমিক, যারা তাদের ন্যায্য মজুরি, ভূমি অধিকার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দাবিতে সম্মিলিতভাবে আওয়াজ তোলেন। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের আয়োজনে রবিবার দুপুরে এই কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, চা বাগানের শ্রমিকরা ১৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বঞ্চিত জীবন যাপন করছেন। আমি সারাদেশ ঘুরে শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র দেখছি এবং এই অন্যায়ের অবসানে কাজ করছি।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিপ্লব মাদ্রাজি পাশি এবং সঞ্চালনায় ছিলেন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আবুল হাসান। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজেকুজ্জামান রতন। বক্তারা বলেন, এই আন্দোলন শুধু চা শ্রমিকদের নয়, এটি একটি জাতীয় মানবিক ইস্যু।
বক্তব্য রাখেন বাসদের মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয়ক মঈনুর রহমান মগনু, সিলেট জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর, হবিগঞ্জের জুনায়েদ আহমেদ এবং আদিবাসী নেত্রী ফ্লোরা বাবলি তালাংসহ আরও অনেকে। তারা বলেন, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন অসম্ভব।
চা শ্রমিকদের ৭ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতকরণ, ভূমির মালিকানা প্রদান, বিনামূল্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, পেনশন সুবিধা, নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন নিরাপত্তা এবং শ্রম আইনের পূর্ণ প্রয়োগ।
প্রধান অতিথি বলেন, দেশের ৭টি চা ভ্যালিতেই এ ধরনের কনভেনশন হবে এবং প্রতিটি এলাকা থেকেই দাবি সংগ্রহ করে এগুলোর বাস্তবায়নে আমরা কাজ করব। তিনি আরও জানান, চা বাগান বিষয়ক বহু প্রকাশনা ও গবেষণা সংগ্রহ করে তিনি একটি স্থায়ী নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিচ্ছেন।
সমাবেশ শেষে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকরা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে লাল পতাকা মিছিল করেন। মিছিল থেকে বারবার উচ্চারিত হয়—মজুরি বাড়াতে হবে, জমির মালিকানা দিতে হবে, শিক্ষা-চিকিৎসায় বৈষম্য চলবে না।
এই কনভেনশন ও মিছিল চা শ্রমিকদের সংগ্রামে নতুন উদ্দীপনা এনে দিয়েছে। অংশগ্রহণকারীরা জানান, এটি ছিল শুধু একটি কর্মসূচি নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য একটি প্রতিজ্ঞা।