প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১১:১২
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণের ফলে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। বুধবার (২১ মে) ভোর থেকে চলতে থাকা হামলায় অন্তত ৯৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে। ত্রাণ ও চিকিৎসাসেবা সংকটের মধ্যে মানবিক পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দেইর আল-বালাহ শহরের একটি গুদামে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুতদের ওপর বিমান হামলায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী ৭ বছর বয়সী শিশু রয়েছে। তাদের মৃত্যুতে পুরো অঞ্চল শোকাহত হয়েছে।
পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরেও ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান চালায় এবং সেখানে বিদেশি কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ও নিন্দা জানিয়েছে। তারা মানবিক ও কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
ত্রাণের অভাবে গাজার মানুষের অবস্থা দিন দিন সংকটময় হয়ে উঠেছে। জাতিসংঘের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজার ভিতরে পৌঁছানো ত্রাণ খাদ্য ও ওষুধের পরিমাণ জনসংখ্যার চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল। চিকিৎসা ব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে, অনেক হাসপাতাল জরুরি সেবা দিতে পারছে না। হৃদরোগ ও রক্তনালিজনিত অস্ত্রোপচার যথাযথভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা পুরনো যন্ত্রপাতি পুনর্ব্যবহার করছেন, যা মানবিক দুর্যোগের চিত্রকে আরো স্পষ্ট করে তোলে।
মেডিকেল সাপ্লাইগুলো খুব সীমিত এবং পাওয়া যেটুকু আছে, তাও মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য পর্যাপ্ত। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালগুলোকে জীবনরক্ষাকারী অস্ত্রোপচারের জন্য কঠোর বাছাই পদ্ধতি গ্রহণ করতে বাধ্য হতে পারে। গাজার মানুষের জীবন যাপন ও নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একত্রিত সহায়তা ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ পুনরায় জোরদার হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং নিরীহ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে জরুরি দায়িত্ব হিসেবে সামনে এসেছে। গাজার হাজার হাজার পরিবার যুদ্ধের ছায়ায় মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি।