প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ১৬:২০
সরকারি চাকরিজীবীদের শৃঙ্খলা ও দায়িত্ব পালনে কড়াকড়ি আনতে সরকার ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে। বুধবার রাতে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে এই অধ্যাদেশটি প্রকাশ করে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ। এতে বলা হয়েছে, আইনসংগত কারণ ছাড়া সরকারের কোনো আদেশ, পরিপত্র বা নির্দেশ অমান্য করলে, তার বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করলে কিংবা অন্য কর্মচারীকে প্ররোচিত করলে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যাবে।
অধ্যাদেশে সরকারি কর্মচারীদের আচরণ ও শাস্তির বিষয়ে কঠোর বিধান রাখা হয়েছে। এর আওতায় কোনো কর্মচারী বৈধ ছাড়া কর্মবিরতিতে গেলে, অন্যদের উপস্থিতিতে বাধা দিলে কিংবা সংগঠিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও তা ‘সরকারি কর্মে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী অসদাচরণ’ হিসেবে বিবেচিত হবে। এসব অপরাধের জন্য শুধু সতর্কতা নয়, বরং বাধ্যতামূলক অবসর, অবনমিতকরণ ও চাকরিচ্যুতির মতো বড় শাস্তি কার্যকর হবে।
নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, অভিযুক্ত সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে সাত কার্যদিবসের মধ্যে নোটিশ দিতে হবে। সেই নোটিশে ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নিতে চান কি না, তা জানতে চাওয়া হবে। অভিযুক্ত জবাব দিলেও বা না দিলেও তিন কার্যদিবসের মধ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটির সদস্যদের অভিযুক্তের চেয়ে জ্যেষ্ঠ হতে হবে এবং অভিযুক্ত নারী হলে কমিটিতে অবশ্যই একজন নারী সদস্য থাকতে হবে।
তদন্ত কমিটিকে ১৪ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। প্রয়োজনে একবারের জন্য সর্বোচ্চ সাত কার্যদিবস সময় বাড়ানো যাবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন না দিলে তা তদন্ত কমিটির অদক্ষতা হিসেবে ধরে তাদের ডোসিয়ারে লিপিবদ্ধ করা হবে এবং চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
তদন্ত শেষে অভিযুক্তকে প্রতিবেদন সরবরাহ করে দণ্ডের বিষয়ে জানানো হবে। তিনি চাইলে দণ্ড ঘোষণার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। আপিল কর্তৃপক্ষ চাইলে দণ্ড বহাল কিংবা বাতিল করতে পারবেন।
তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের ক্ষেত্রে কোনো আপিল গ্রহণযোগ্য নয়। এমন অবস্থায় দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী রাষ্ট্রপতির কাছে পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারবেন। এই অধ্যাদেশ সরকারি প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।