প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৫, ১১:১১
সিলেট শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট বর্তমানে চরম আকার ধারণ করেছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে নগরজুড়ে লোডশেডিং চললেও গত ১০ দিন ধরে সমস্যাটি আরও ঘনীভূত হয়েছে কুমারগাঁও পাওয়ার স্টেশন বন্ধ থাকার কারণে। এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাগরিক জীবন চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় ঘরে-বাইরে স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ প্রতিটি খাতেই এর প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সূত্রে জানা গেছে, কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের আওতাধীন ২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার স্টেশনটির একটি ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ায় এটি সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। যেহেতু এই যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আনতে হয়, তাই মেরামতের বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত।
বিউবো সিলেট অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির জানিয়েছেন, সিলেটে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনো ব্যবস্থা নেই। পুরো অঞ্চল জাতীয় গ্রিডের উপর নির্ভর করে। লো-ভোল্টেজ এবং সরবরাহ ঘাটতির কারণে সমস্যার মাত্রা বেড়ে গেছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
পাওয়ার স্টেশন বন্ধের বিষয়ে মতভেদও রয়েছে। কেউ বলছেন যান্ত্রিক ত্রুটি, আবার কেউ বলছেন এটি মূলত রক্ষণাবেক্ষণের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী দাবি করেছেন, বড় কোনো যান্ত্রিক সমস্যা নেই, বরং এটি পরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণের অংশ।
সিলেট মহানগরীর পাঁচটি বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন ১৩টি সাবস্টেশন অতিরিক্ত চাপে রয়েছে। গরমের তীব্রতা বৃদ্ধির ফলে ফিউজ ও তার ছিঁড়ে যাওয়ার ঘটনা বেড়েছে, এর ফলে ভোল্টেজ ড্রপও সাধারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত বৃহস্পতিবারের হিসাব অনুযায়ী, সিলেট অঞ্চলে প্রায় ৩৩ শতাংশ বিদ্যুৎ ঘাটতি ছিল। সিলেট বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই-আরেফিন বলেন, “আমাদের হাতে বিদ্যুৎ নেই, ঢাকার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। যখন-তখন সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়েছে।”
এই অবস্থার উন্নতি না হলে সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিমধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, কেউ কেউ ক্ষোভে বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।