প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ১৮:১২
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সাবেক ক্ষমতাসীনদের বিলাসবহুল সম্পদ কেনাবেচা, স্থানান্তর ও পুনঃঋণায়নের নানা তথ্য প্রকাশ্যে আসায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরবর্তী এক বছরের সময়কাল। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-এর যৌথ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের জমি নিবন্ধন প্রতিষ্ঠানে অন্তত ২০টি সম্পত্তি লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে।
তদন্তে জানা গেছে, সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজার মালিকানাধীন প্রায় ১ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকার অ্যাপার্টমেন্ট যুক্তরাজ্যের অপরাধ দমন সংস্থা এনসিএ জব্দ করেছে। একইভাবে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর পরিবারের প্রায় ২ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকার সম্পত্তিও জব্দের আওতায় আসে। বসুন্ধরা গ্রুপের সায়েম সোবহান ও শাফিয়াত সোবহানের লন্ডন ও সারে-তে সম্পদ স্থানান্তরের বিষয়েও তথ্য উঠে এসেছে।
এসব সম্পদ বিপুল পরিমাণ অর্থে বিক্রি বা রিফাইন্যান্সের প্রচেষ্টা স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। শুধু তাই নয়, রিজেন্টস পার্কে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামানের টাউনহাউস বিক্রির ঘটনাও উঠে এসেছে। সালমান এফ রহমানের ছেলে ও ভাতিজার ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ডের ফ্ল্যাট ইতিমধ্যে এনসিএ ফ্রিজ করেছে।
এদিকে এসব অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়ে সম্পূর্ণ তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে অভিযুক্ত পক্ষ। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য সরকারকে অনুরোধ করেছেন তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এসব সম্পদ যেন বিক্রি বা স্থানান্তর না হয়।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের দুর্নীতিবিষয়ক গ্রুপের প্রধান জো পাওয়েল লন্ডনকে দুর্নীতির আশ্রয়স্থলে পরিণত না করতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সতর্কভাবে এগোনোর আহ্বান জানান। এদিকে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ও পরামর্শদাতাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে অনুসন্ধানী রিপোর্ট। সব মিলিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মাত্র এক বছর না যেতেই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সম্পদ সরানোর এই ধারা আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশ-সংক্রান্ত দুর্নীতির চিত্রকে নতুন করে উন্মোচন করছে।