প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১০:২
জাপান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তা অবশেষে কাটিয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার টোকিওতে অনুষ্ঠিত হওয়া এই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মো. নজরুল ইসলাম। সোমবার জাপান দূতাবাসে হঠাৎ করেই বৈঠক স্থগিত করার খবর জানানো হয়, যা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল।
বৈঠক স্থগিতের পেছনে বাংলাদেশে পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনকে পরিবর্তনের প্রক্রিয়া রয়েছে বলে কূটনৈতিক সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। নীতিনির্ধারণী মহলে এ বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে বৈঠক স্থগিতের ঘটনা জুড়ে থাকায় অনেকে এর মধ্যে যোগসূত্র দেখতে পাচ্ছেন।
এই বৈঠকটির গুরুত্ব দ্বিগুণ, কারণ চলতি মাসের শেষদিকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা জাপান সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ওই সফরের আগে টোকিওতে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠক নির্ধারণ ছিল। যদিও হঠাৎ বৈঠক স্থগিত হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল, তবে পরে আলোচনা চালিয়ে বৈঠক নির্ধারণ হয়।
বৈঠকটি দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম অংশে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, বিশেষ করে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে। বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক সহযোগিতা, সংস্কৃতি বিনিময় এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার ওপর গুরুত্ব দেবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়টিও বৈঠকে আলোচ্য থাকবে।
দ্বিতীয় অংশে আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতি এবং জাপানের পক্ষ থেকে চীনসহ পূর্ব এশিয়ার বিষয়ে মতবিনিময় হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হঠাৎ স্থগিত চিঠি দেশীয় নীতিনির্ধারণী মহলসহ জাপানকেও অবাক করে দিয়েছিল। বিশেষ করে অধ্যাপক ইউনূসের সফরের ঠিক আগে এই ঘটনা ঘটায় কিছুটা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তবে সরকারের সময়মতো হস্তক্ষেপে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক ঝামেলামুক্ত রাখা সম্ভব হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনকে দায়িত্ব দেওয়ার মাত্র আট মাস পরই তার পরিবর্তন নিশ্চিত হতে যাচ্ছে। বর্তমানে জাতিসংঘের মন্ত্রী পর্যায়ের একটি বৈঠকে অংশ নিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জার্মানি সফরে আছেন। বৃহস্পতিবার দেশে ফেরার পর পররাষ্ট্র সচিব পদে পরিবর্তন চূড়ান্ত হবে। তবে তার উত্তরসূরি কে হবেন, তা নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে।
এই পরিবর্তন ও বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। বিশেষ করে জাপানের সঙ্গে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে।