প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ২০:৫১
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন, দেশের অর্থনীতির অগ্রগতির জন্য এই বন্দরই হচ্ছে মূল ভরসা। তিনি বলেন, বন্দরকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। বুধবার সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি-৫ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। হৃৎপিণ্ড দুর্বল হলে যেমন শরীর চলতে পারে না, তেমনি বন্দর যদি আধুনিক না হয়, তবে অর্থনীতি কখনোই গতিশীল হবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বন্দরকে বিশ্বমানের করে তুলতে না পারলে রপ্তানি ও আমদানির গতিও বাধাগ্রস্ত হবে।
সভায় তিনি বলেন, দুঃখের বিষয় হলো—চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন অত্যন্ত ধীর গতির। সারা বিশ্ব দ্রুত পরিবর্তন হলেও এই বন্দরে তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। যানজট, অব্যবস্থাপনা ও পণ্য খালাসে বিলম্বের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় ধরণের ক্ষতি হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ড. ইউনূস বলেন, তিনি বহু বছর ধরে এসব সমস্যা নিয়ে লেখালেখি করে আসছেন। কিন্তু এবার রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি সরাসরি সমস্যাগুলোর সমাধানে মনোযোগী হয়েছেন। তার মতে, এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারলেই চট্টগ্রাম বন্দর অর্থনীতির গতি সঞ্চালনে বড় ভূমিকা রাখবে।
চট্টগ্রাম সফরের শুরুতেই তিনি এই বন্দর পরিদর্শনে যান। এটিই প্রধান উপদেষ্টার চট্টগ্রামে প্রথম সফর এবং নিজের এলাকায় আসায় তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। পরিদর্শন শেষে তিনি যান সার্কিট হাউসে, যেখানে তিনি কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেন।
পরে তিনি চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান ও হাটহাজারী-অক্সিজেন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। একই অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের জন্য ২৩ একর জমির হস্তান্তর সম্পন্ন হয়।
দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দেন। সেখানে ২২ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর সনদ প্রদান করা হয় এবং তাকে ‘ডি লিট’ ডিগ্রি প্রদান করা হয় ক্ষুদ্রঋণ ও দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানের জন্য।
সমাবর্তন শেষে তিনি যান হাটহাজারীর বাথুয়া গ্রামে নিজের পৈতৃক বাড়ি। সেখানে তিনি আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে সময় কাটান এবং সন্ধ্যায় ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ত্যাগ করেন।