প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১৬:৩১
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়ন বুধবার সকাল থেকে রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। দীর্ঘদিনের গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব, জমি নিয়ে বিরোধ এবং মাদক সংশ্লিষ্ট উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন নিয়াজুল মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তি। তিনি স্থানীয় চান্দের গোষ্ঠীর তোতা মিয়ার ছেলে ছিলেন।
চান্দের ও সলিম গোষ্ঠীর মধ্যে ঘটে এই সংঘর্ষ। দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোটা ও ইট-পাটকেল নিয়ে সকাল থেকেই শুরু হয় দফায় দফায় হামলা-পাল্টা হামলা। পুরো এলাকা পরিণত হয় আতঙ্কের জনপদে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এলাকাবাসী জানান, সোমবার রাতে এক যুবকের মাদকসেবনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন সকালে গোষ্ঠীদ্বয় একে অপরের ওপর চড়াও হয়। বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। আতঙ্কে অনেক পরিবার তাদের শিশু-বৃদ্ধদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে জমি ও সামাজিক আধিপত্য নিয়ে দন্দ্ব চলছিল। সম্প্রতি নতুন করে মাদক ইস্যু তাতে ঘি ঢালে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, তবে তখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়।
আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, তাদের মধ্যে কয়েকজনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে, যা আশঙ্কাজনক।
সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, “দীর্ঘদিনের গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের সঙ্গে স্থানীয় নেতৃত্বের ব্যর্থতা এই সংঘর্ষে ভূমিকা রেখেছে।” তিনি জানান, দোষীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বর্তমানে এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সদিচ্ছার মাধ্যমে অবসান ঘটবে এ ধরনের রক্তক্ষয়ী দ্বন্দ্বের।