নওগাঁ জেলার জনজীবন বৃষ্টিহীন বৈশাখের তীব্র তাপদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে চলা এই দাবদাহে তাপমাত্রা ৩৯ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই অবস্থা আগামী ১৬ মে পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
বদলগাছী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রার কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে না। নওগাঁয় সকাল থেকেই সূর্যের প্রখর তাপ শুরু হয়, যা দুপুরের মধ্যে অসহনীয় হয়ে ওঠে। দিনমজুর, রিকশাচালক ও কৃষি শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
শহরের মাষ্টারপাড়া এলাকার গৃহিণী সেফালী খাতুন বলেন, "টিনের ঘরে থাকা দায় হয়ে গেছে। গরমে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।" রিকশাচালক জামাল হোসেন বলেন, "প্রচণ্ড গরমে রিকশা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে, কিন্তু কাজ না করলে সংসার চালানো যাবে না।"
ধান কাটার মৌসুমে কৃষি শ্রমিকরাও ভুগছেন। শৈলগাছী এলাকার শ্রমিক রিয়াকত হোসেন বলেন, "গরমে কাজ করতে গিয়ে বারবার বিশ্রাম নিতে হচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলে স্বস্তি মিলত।"
তাপদাহের প্রভাব পড়েছে আম চাষেও। নওগাঁ জেলায় এবার ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে, কিন্তু তীব্র গরমে আমের বোটা ঝরে পড়ছে। কৃষি বিভাগ চাষিদের নিয়মিত পানি স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার আবু জার গাফফার বলেন, "গরমে ডিহাইড্রেশন ও হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়েছে। পর্যাপ্ত পানি ও স্যালাইন খাওয়া জরুরি।"
এই অসহনীয় গরমে সাধারণ মানুষ স্বস্তির জন্য বৃষ্টির অপেক্ষায় আছে। আবহাওয়া বিভাগ আশা করছে, ১৬ মে’র পর পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে পারে।