হামাস-ইসরায়েল চুক্তি: চার নারী সেনার মুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে আজ শনিবার হামাস চার ইসরায়েলি নারী সেনাকে মুক্তি দেওয়ার কথা জানিয়েছে। সেনারা হলেন কারিনা আরিয়েভ, ড্যানিয়েলা গিলবোয়া, নায়ামা লেভি এবং লিরি আলব্যাগ। তাদের বয়স ১৯ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। ইসরায়েল সরকার ইতিমধ্যে সেনাদের পরিবারকে মুক্তির জন্য প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। তবে ইসরায়েল আশা করেছিল, আরবেল ইয়েহুদ নামে এক বেসামরিক বন্দি মুক্তি পাবেন। কিন্তু তাকে হামাস নয়, আটক করেছে প্যালেস্টিনিয়ান ইসলামিক জিহাদ। এ কারণে তিনি মুক্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হননি।
হামাস চুক্তির আওতায় ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির আশা করছে। এই বন্দিদের মধ্যে ১২০ জন আজীবন সাজাপ্রাপ্ত এবং ৮০ জন দীর্ঘমেয়াদি সাজাপ্রাপ্ত। চুক্তি অনুসারে, একেকজন নারী সেনার জন্য ইসরায়েল ৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। তবে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল নিশ্চিত করেনি, কোন বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাদের পরিবার এই মুক্তির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও চুক্তি কার্যকর হওয়া নিয়ে এখনও সংশয় রয়ে গেছে। কারণ, বন্দি বিনিময়ের প্রক্রিয়া নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আরও কিছু জটিলতা রয়েছে। হামাসের দাবি, ইসরায়েল দ্রুত মুক্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে এবং কোনো ধরণের বিলম্ব বা বাধা সৃষ্টি করবে না।
এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই আন্তর্জাতিক চাপ এবং মানবিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বন্দি বিনিময়ে রাজি হয়েছে। তবে, চুক্তি পুরোপুরি কার্যকর হলে ভবিষ্যতে এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বন্দি বিনিময়ের এই চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনার কিছুটা সমাধান হতে পারে। তবে তারা সতর্ক করে দিয়েছে, ইসরায়েল যদি চুক্তি লঙ্ঘন করে, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সেনাদের মুক্তি পাওয়া মানবিক দিক থেকে একটি বড় অর্জন। তবে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির ক্ষেত্রে তারা কোনো ধরণের শর্ত বা চাপে থাকবে না বলে উল্লেখ করেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে নতুন করে আলোচনার দ্বার উন্মোচিত হতে পারে। তবে উভয় পক্ষের মধ্যকার আস্থা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এই চুক্তির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক মহল দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনাকে সমর্থন জানিয়েছে এবং তারা আশা করছে, এই চুক্তি একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে নিয়ে যাবে। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে তা পুরোপুরি নির্ভর করছে চুক্তি বাস্তবায়নের সফলতার ওপর।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।