রাজবাড়ীতে বাড়ছে পানি, বন্দি হাজারো পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২রা সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৩০ অপরাহ্ন
রাজবাড়ীতে বাড়ছে পানি, বন্দি হাজারো পরিবার

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া পয়েন্টে গত ২৪ঘন্টায় পদ্মার পানি ৯সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬১সে.মি. পাংশার সেনগ্রাম পয়েন্টে ৫সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে ৫২সে.মি. এবং সদরের মহেন্দ্রপুর পয়েন্টে  ৫সে.মি. বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১২সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


ফলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে রাজবাড়ী সদর, কালুখালী, গোয়ালন্দ ও পাংশা উপজেলাসহ জেলার প্রায় সাড়ে ৭হাজার পরিবার। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্যের সঙ্কট দেখা দেয়ায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে এসব পরিবার।


সরেজমিন জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, পদ্মার পানি বিভিন্ন পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে। পানি বাড়ায় রাজবাড়ী সদর, কালুখালী, গোয়ালন্দ ও পাংশা উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকে পড়েছে। রাস্তা, ঘাট, ব্রীজ, কালভার্টসহ তলিয়ে গেছে সবজি ক্ষেত ও বিভিন্ন ফসলি জমি। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। বন্যার্তরা গবাদি পশু নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। সঙ্কট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার। ভেঙ্গে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। চরাঞ্চলের মানুষেরা ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকে আশ্রয় নিয়েছে বেড়িবাঁধ এলাকায় আত্মীয় স্বজনদের কাছে। আর যাদের যাওয়ার কোন স্থান নেই তারা পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।


 গোয়ালন্দ উপজেলার ৩নং ওয়ার্ডের নতুন পাড়া এলাকার ছনিয়া খাতুন বলেন, প্রায় মাস খানেক ধরে পানিবন্দী হয়ে আছি, বাড়ির চার পাশে পানি, ছোট বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে বিপদে আছি। কোনসময় কি হয়। চুলো পানিতে ডুবে গেছে। রান্নাবান্না খুবই সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া ক্ষেত খামার পানিতে ডুবে যাওয়ায় বাড়ির পুরুষরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এখন পর্যন্ত কেউ ত্রান সহায়তা নিয়ে আমাদের কাছে আসেনি। আমরা খুবই কষ্টে জীবন পার করছি।


রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের ডালিম বেগম বলেন, এবারের বন্যায় দুঃখ দূর্দশার কোন শেষ নেই, রাস্তা ঘাট জমিজমা সব তলিয়ে গেছে, কাজকাম নাই, নিজেদের জীবন বাঁচানোই দায় হয়ে পড়েছে। বাড়ির উঠানে পানি থাকায় গরু, বাছুর নিয়ে পড়েছি মহা বিপাকে আর তাছাড়াও রয়েছে পোকামাকড়ের ভয়। এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যান, মেম্বার কেউ খোঁজ খবর নেয়নি।


জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুল হক বলেন, রাজবাড়ীতে প্রায় সাড়ে ৭হাজার পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে।  ইতিমধ্যে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা দেয়া শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে জেলার সব বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে।