বাংলাদেশি নারীর মরদেহ কালকেরে হ্রদের পাশে উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক
সৌম্যা সাহা , কলকাতা প্রতিনিধি ভারত
প্রকাশিত: শনিবার ২৫শে জানুয়ারী ২০২৫ ১১:৩১ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশি নারীর মরদেহ কালকেরে হ্রদের পাশে উদ্ধার

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরু শহরের কালকেরে হ্রদের কাছে শুক্রবার সকালে এক বাংলাদেশি নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত নারী স্থানীয়ভাবে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন এবং গত ছয় বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে বসবাস করছিলেন। স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে তিনি নিখোঁজ হন। পরদিন সকালে কালকেরে হ্রদের পাশের একটি নির্জন এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ধারণা করছে, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।  


নিহত নারীর স্বামী একজন আবর্জনা পরিষ্কারক কর্মী এবং তাদের তিন সন্তান রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিহত নারী তার সহকর্মীকে জানিয়েছিলেন যে তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ রয়েছে এবং ফিরতে দেরি হতে পারে। রাতে বাড়ি না ফেরায় তার স্বামী থানায় নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করেন। পরদিন সকালে স্থানীয়রা একটি নির্জন স্থানে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। মরদেহ উদ্ধারের সময় তার শরীরে পাথরের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।  


পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নারী সম্ভবত পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করতে নির্জন এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে তার ওপর হামলা চালানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কিছু আলামত সংগ্রহ করেছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সম্ভাব্য সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করতে তদন্ত চলছে।  


এলাকার বাসিন্দারা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বেঙ্গালুরুতে অপরাধের মাত্রা বেড়েছে। বিশেষ করে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এলাকাবাসী দ্রুত অপরাধীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, নিহত নারীর পরিবার গভীর শোকাহত। তারা দ্রুত ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছে।  


পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় বিভিন্ন বিষয় তদন্ত করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এমন ঘটনা ঘটছে। অপরাধীদের চিহ্নিত করতে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর তদন্তে আরও অগ্রগতি হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।  


স্থানীয়রা বলছেন, নিরাপত্তার অভাব এবং অপরাধের বাড়বাড়ন্তের কারণে নারীদের চলাচল অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তারা প্রশাসনের কাছে আরও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন বলে মত দিয়েছেন তারা।  


নিহত নারীর সহকর্মীরা জানান, তিনি খুবই পরিশ্রমী এবং পরিবারকেন্দ্রিক ছিলেন। তার এমন নির্মম মৃত্যুতে সবাই গভীরভাবে মর্মাহত। এলাকাবাসী ও নিহত নারীর সহকর্মীরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের দ্রুত বিচারের দাবি করেছেন।  


পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করতে তাদের বিশেষ দল কাজ করছে। তবে তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য স্থানীয়দের কাছ থেকেও তথ্য চাওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সারা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অপরাধ দমনে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।